সামনে বিধানসভা ভোট। তার আগে বঙ্গ বিজেপি সংগঠনকে ভোটের জন্য প্রস্তুত করতে ৫ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন অমিত শাহ। বাংলাকে মোট ৫ ভাগে ভেঙ্গে ৫ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সুনীল দেওধর, বিনোদ তাওড়ে, দুষ্মন্ত গৌতম, সতীশ দ্বিবেদী ও বিনোদ সোনকরকেই কেন দায়িত্ব দিয়ে বাংলায় আনা হচ্ছে? কী তাঁদের ইউএসপি? কেমন ট্র্যাক রেকর্ড টিম অমিত শাহের পঞ্চপাণ্ডবের?
নাম- সুনীল দেওধর
বাংলায় দায়িত্ব- হাওড়া, হুগলী ও মেদিনীপুর (মোট ৬৯ টি বিধানসভা আসন)
ইউএসপি- ঝরঝরে বাংলা বলতে পারেন
ট্র্যাক রেকর্ড– অন্ধ্রপ্রদেশের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়া সুনীল দেওধরের উপর বিশেষ আস্থাশীল মোদী-শাহরা। তার কারণও আছে। বিজেপির জাতীয় সম্পাদক সুনীল প্রথম ছিলেন আরএসএস প্রচারক। ‘১৪-র লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর হয়ে বারাণসী কেন্দ্রে ভোট প্রচারের ছক কষার দায়িত্ব ছিল দেওধরের উপর। এহেন পোল স্ট্র্যাটেজিস্ট সুনীলের সাফল্যের খতিয়ান চোখ ধাঁধানো। ২০১৩ সালে দিল্লিতে যখন প্রথম ভোটে লড়ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তখন দেওধর পুরো দক্ষিন দিল্লির দায়িত্বে। সেখানে ১০ টি আসনের ৭ টিতে বিজেপিকে জয় পাইয়ে দেন। এরপর ২০১৪ সালে অমিত শাহ তাঁকে পাঠান মহারাষ্ট্রে। সেখানে বামেদের একমাত্র কঠিন দূর্গ পালঘর কেন্দ্রেও ফাটল ধরান তিনি। এতে দেওধরের উপর আস্থা বাড়ে বিজেপির। এরপর তাঁকে দেওয়া হয় অপেক্ষাকৃত কঠিন বাম ঘাঁটি, ত্রিপুরার দায়িত্ব। সেখানেও একটানা ২৫ বছর ধরে থাকা বাম সরকারের পতনের মূল কারিগর বলা হয় সুনীল দেওধরকে।
মারাঠি হলেও বাংলায় নতুন নন সুনীল। ত্রিপুরার পর্যবেক্ষক থাকার সময় গত লোকসভা নির্বাচনে কলকাতাতেও তিনি প্রচার করেছেন।
নাম- বিনোদ তাওড়ে
বাংলায় দায়িত্ব- নবদ্বীপ জোন
ইউএসপি- সংগঠনে সকলকে একসাথে নিয়ে চলা
ট্র্যাক রেকর্ড- মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বিনোদ তাওড়ে মুম্বই বিজেপির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। কয়েকবার মহারাষ্ট্রের বিজেপি সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা এই নেতা প্রথম কৃষির জন্য পৃথক বাজেটের দাবি তুলেছিলেন। অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি থেকে একাধিক বিতর্কের মুখে পড়েছেন আগে। তবে এখনও টিম অমিত শাহের অন্যতম তাওড়ে। এই কৃষক নেতাকে এবার বাংলার বিশেষ পর্যবেক্ষক করে এনেছে বিজেপি।
নাম- দুষ্মন্ত গৌতম
বাংলায় দায়িত্ব- কলকাতা
ট্র্যাক রেকর্ড- বর্তমানে ছত্তিশগড়ের পর্যবেক্ষক দুষ্মন্ত মধ্য প্রদেশে বিজেপির সাফল্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দুষ্মন্ত গৌতম একাধারে রাজনীতিবিদ, তেমনি সফল ব্যবসায়ীও বটে। উত্তর দিল্লির মালকাগঞ্জ বস্তি এলাকা থেকে বড় হওয়া দুষ্মন্তের রাজনীতিতে প্রবেশ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকে। এবিভিপির নেতা থেকে আরএসএসের প্রচারক দুষ্মন্ত বিজেপির জন্মলগ্ন থেকে দলে আছেন। বহু রাজ্যের নির্বাচন স্ট্র্যাটেজি ও পর্যবেক্ষকের ভূমিকা সামলানো দুষ্মন্ত গৌতম ছিলেন ‘১৯ লোকসভা ভোটের আগে উত্তর প্রদেশের পর্যবেক্ষক।
নাম- বিনোদ সোনকর
বাংলায় দায়িত্ব- রাঢ় বাংলা
ইউএসপি- ত্রিপুরা সামলানোর অভিজ্ঞতা
ট্র্যাক রেকর্ড- রাজ্যে এসে দুর্গাপুরে বৈঠকে সদ্য ত্রিপুরার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব-পাওয়া বিনোদ সোনকর। উত্তর প্রদেশের ভোটের সময় দায়িত্বে ছিলেন ২০১৯ লোকসভা ভোটে কৌশম্বি কেন্দ্র থেকে জয় পাওয়া এই বিজেপি সাংসদ।
নাম- সতীশ দ্বিবেদী
বাংলায় দায়িত্ব- উত্তরবঙ্গ
ইউএসপি- সংগঠন
ট্র্যাক রেকর্ড- উত্তর প্রদেশের দাপুটে মন্ত্রী সতীশ দ্বিবেদী যোগী আদিত্যনাথ থেকে অমিত শাহের আস্থাভাজন নেতা। উত্তর প্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রী। লকডাউনের সময় ছেলেমেয়ের চুল কেটে ভাইরাল হওয়া এই মন্ত্রীর সাংগঠনিক বুদ্ধির তারিফ করে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই এবার যোগী রাজ্যের মন্ত্রীকে বঙ্গ বিজেপির সংগঠনের হাল খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
Comments are closed.