ম্যারাপ বেঁধে দুর্গা পুজোয় নিষেধাজ্ঞার যোগী-সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনীতি তোলপাড়। বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী হিসেবে তুলে ধরে ইতিমধ্যেই সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে যোগী সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি আপত্তি জানিয়ে তীব্র কটাক্ষ এল বিজেপির ঘর থেকেই। বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের ট্যুইট, যোগী সরকারের নির্দেশিকা বিভেদমূলক, অন্যায্য এবং হাস্যকর।
করোনা পরিস্থিতিতে উত্তর প্রদেশে দুর্গা পুজো নিয়ে যোগী সরকারের নির্দেশিকা ঘিরে তীব্র বিতর্ক চলছে। উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকারের নির্দেশ, এবার দুর্গা পুজো উপলক্ষ্যে প্রকাশ্যে জমায়েত করা যাবে না। তাই প্যান্ডেল খাটিয়ে দুর্গা পুজো নয়, কারও ইচ্ছে থাকলে বাড়িতে পুজো করতে পারেন। তাছাড়া প্রতিমা বিসর্জন ও শোভাযাত্রা নিয়েও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যোগী সরকার। কিন্তু ছাড় দেওয়া হয়েছে রাম লীলা অনুষ্ঠানে। যাকে বিভেদমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তাই উত্তর প্রদেশের মুখ্য মন্ত্রীর কাছে শুধু এই নির্দেশিকা পর্যালোচনা করার আবেদন জানান বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। ট্যুইটে কড়া বাক্যে শুনিয়ে দিয়েছেন, এই নির্দেশিকা আসলে বিভেদমূলক এবং অন্যায্য। নিজের দলের যোগী আদিত্যনাথের কাছে তাঁর আর্জি, রাম লীলার মতো কোভিডবিধি মেনেই দুর্গা পুজোরও অনুমতি দেওয়া হোক। না হলে সে রাজ্যের বাঙালি হিন্দুদের সঙ্গে বৈষম্য করা হবে।
ট্যুইটে বিজেপি সাংসদ লিখেছেন, ‘উত্তর প্রদেশ সরকার বাড়িতে দুর্গা পুজো করতে বলছে। যা অনুচিত এবং হাস্যকরও বটে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘রামলীলায় যেমন নিয়ম মেনে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তেমন দুর্গা পুজোতেও দেওয়া হোক। না হলে তা হবে বৈষম্যমূলক। উত্তর প্রদেশের বাঙালিদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা হোক।’
গত বছর অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ থেকে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বাংলায় সভা করতে এসে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে যে নানা অভিযোগ করেছেন, তার মধ্যে একটি ছিল বাংলায় নাকি সুষ্ঠুভাবে দুর্গা পুজো করতে দেওয়া হয় না। এদিকে কোভিড পরিস্থিতিতে বাংলা তো বটেই ত্রিপুরা, ওড়িশার মতো রাজ্যেও বিধিনিয়ম মেনে দুর্গা পুজো করার অনুমতি দিয়েছে সেখানকার সরকার। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূল বিষয়টি নিয়ে উঠেপড়ে লাগায় বিড়ম্বনা বেড়েছে বঙ্গ বিজেপি শিবিরে। উত্তর প্রদেশে এমনিতেই বহু বাঙালির বাস। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বাঙালি মুখ স্বপন দাশগুপ্তকে দিয়ে প্রবাসী বাঙালিদের মুখপত্র হিসেবে বারোয়ারি দুর্গা পুজোর হয়ে সওয়াল করিয়ে ব্যাপারটা ম্যানেজ করার চেষ্টা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Comments are closed.