ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে রাজনীতি নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের আসন্ন ভারত সফরে ম্যাচের ভেন্যু নির্ধারনে কি বাংলার রাজনীতির কোনও সম্পর্ক আছে? সেই প্রশ্নই এবার উঠে গেল ভারত-ইংল্যন্ডের ক্রীড়া সূচি প্রকাশিত হওয়ার পর। কিন্তু কেন?
আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ইংল্যান্ডের ভারত সফরে টেস্ট, ওয়ান ডে এবং টি টুয়েন্টি মিলিয়ে মোট ১২ টি ম্যাচ হওয়ার কথা। ঠিক হয়েছে, তার মধ্যে আহমেদাবাদে হবে ৭ টি ম্যাচ। বাকি ৫ টি ম্যাচ হবে পুণে এবং চেন্নাইয়ে। কলকাতায় কোনও ম্যাচ নেই!
কেন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির শহর কলকাতা বা ভারতীয় ক্রিকেটের মক্কা বলে পরিচিত মুম্বইয়ে কোনও ম্যাচ নেই তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জলঘোলা হতে শুরু করেছে বিসিসিআইয়ের অন্দরমহলে। এরই মধ্যে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, অমিত শাহের ছেলে এবং বোর্ডের সচিব জয় শাহের শহর আহমেদাবাদে ৭ টি ম্যাচ, অথচ কলকাতায় কোনও ম্যাচ না হওয়ার কারণ কী? অনেকে একে জয় শাহের কাছে বোর্ড সভাপতি সৌরভের পরাজয় হিসেবেই দেখছেন। প্রশ্ন উঠছে সিএবির অন্দরেও।
মহানাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে বোর্ড সভাপতি হয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। সেই সময় বিতর্ক হয়েছিল, অমিত শাহের ইচ্ছেতেই কি শেষ মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির চেয়ারে বসেছেন সৌরভ! এই ঘটনার পরই জল্পনা তৈরি হয়, বাংলায় কি বিজেপির মুখ হতে চলেছেন মহারাজ? যদিও সৌরভ এই জল্পনা উড়িয়ে একাধিকবারই জানিয়েছেন, তাঁর রাজনীতিতে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। এমনকী সম্প্রতি জানা যায়, বিজেপির প্রস্তাব ফিরিয়েছেন সৌরভ। এখন ভারত-ইংল্যন্ড ক্রীড়া সূচি সেই প্রশ্ন এবং জল্পনাকেই ফের খুঁচিয়ে তুলল। প্রশ্ন উঠছে, সভাপতি সৌরভ নন, ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের মূল চালিকা শক্তি সচিব জয় শাহের হাতে। তিনিই নাকি ধীরে ধীরে বোর্ডের সুপার প্রেসিডেন্ট হয়ে উঠছেন! আর সৌরভ বিজেপির প্রস্তাব ফেরানোর জন্যই নাকি কোনও ম্যাচ পায়নি ইডেন!
ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের ভেন্যু নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাতে ইতিমধ্যেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। সচিনের শহরে কেন ম্যাচ নেই, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। এই নিয়ে ডিসেম্বরের শেষে বোর্ডের সভাও উত্তপ্ত হতে পারে বলে খবর।
যদিও গোটা বিতর্কে বোর্ডের তরফে সরকারিভাবে রোটেশন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। বোর্ডের যুক্তি, তিনটি ভেন্যুতে ম্যাচ আয়োজনের কথা ছিল, সেই অনুযায়ী আহমেদাবাদ, পুণে ও চেন্নাইয়ে ম্যাচ ঠিক হয়েছে। কিন্তু এই যুক্তি মানতে রাজি নয় মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন।
মুম্বই ক্রিকেট আসোসিয়েশনের মতো প্রকাশ্যে কিছু না জানালেও, সিএবির একাংশের প্রশ্ন, সৌরভ বিজেপির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়াতেই কি বঞ্চিত হল ইডেন গার্ডেনস?
আগামী ২৪ ডিসেম্বর বোর্ডের সভা। শোনা যাচ্ছে, সেখানে এই ভেন্যু ইস্যুতে সুর চড়াতে পারেন মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। কিন্তু বাংলার ক্রিকেট মহলের একাংশ ইডেনে ম্যাচ না হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কারণই দেখছে। সব মিলিয়ে এই ইস্যুতে বিসিসিআইয়ের অন্দরে তো বটেই, সিএবির মধ্যেও যথেষ্ট চাপে সৌরভ।
Comments are closed.