মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু দিন ধরেই অভিযোগ করছেন সিপিএমের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশের। আর তা অস্বীকার করে বারবার বিবৃতি দিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়েই পড়ল শেষ পর্যন্ত।
বুধবার সিপিএমের রাজ্য কমিটি মিটিংয়ে অন্তত ৭-৮টিজেলার নেতা স্বীকার করলেন, পঞ্চায়েত ভোটে দলের লাইন না মেনে নিচুতলার নেতারা তৃণমূলকে হারাতে বিজেপির সঙ্গে গ্রাম স্তরে কিংবা বুথ স্তরে সমঝোতা করেছেন। নেতাদের স্বীকারোক্তি, জেলার সিপিএমের অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূলকে হারাতে গেলে বিজেপির হাত শক্ত করতে হবে।
বুধবার বিকেল থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে শুরু হয়েছে দু’দিনের রাজ্য কমিটির মিটিং। এবারের মিটিংয়ে মূল অ্যাজেন্ডা পঞ্চায়েত ভোটের পর্যালোচনা। শুরুতেই খানিকটা আত্মসমালোচনার সুরে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, এক বছর ধরে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুত নেওয়ার কথা বলা হলেও অনেকেই প্রার্থী হতে সাহস করেননি। এসসি, এসটি সার্টিফিকেট তোলার ব্যবস্থা করা হয়নি। রাজ্য সম্পাদকের পর শুরু হয় পঞ্চায়েত ভোটের ময়নাতদন্ত। প্রায় ১০টি জেলা এদিন বক্তব্য পেশ করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার শমীক লাহিড়ী, বাঁকুড়ার অজিত পতি, মুর্শিদাবাদের মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য, পূর্ব মেদিনীপুরের নিরঞ্জন সিহি, পশ্চিম মেদিনীপুরের তাপস সিংহসহ আরও কিছু জেলার নেতা একযোগে বলেন, বহু এলাকায় পার্টির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সিপিএম নেতারা তৃণমূলকে হারাতে বুথ এবং গ্রাম স্তরে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করেছেন। কোথাও প্রকাশ্যে, কোথাও নির্দলের মোড়কে। তাঁরা মনে করছেন, আপাতত বিজেপিকে সঙ্গে নিয়েই রাজ্যে শাসক দলকে হারাতে হবে।
বিজেপি-সিপিএমের এই যোগসাজশ বা বোঝাপড়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করছেন তৃণমূল নেত্রী। এদিনের রাজ্য কমিটির মিটিংয়ে সিপিএম নেতারাও একই কথা বলায় আলিমুদ্দিনের অস্বস্তি আরও বাড়ল।