পশ্চিমবঙ্গকে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার জন্য গড়ে উঠেছে ‘ডেস্টিনেশন ইস্ট’ নামে এক প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গের আনাচে কানাচে এত বৈচিত্র্য ছড়িয়ে রয়েছে, তা বলার নয়। এর ইতিহাস যেমন প্রাচীন এবং সুখপাঠ্য, তেমনই এর স্থান মাহাত্ম্য। পূবের এই রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এত দেখার এবং উপভোগ করার মতো জায়গা রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনায়াসে এই রাজ্যকে আন্তর্জাতিক পর্যটনের আওতায় নিয়ে আসা যায়। বিদেশি পর্যটকদের কাছে তাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। মূলত সেই কারণেই ডেস্টিনেশন ইস্ট বা ‘গন্তব্য পূর্ব’র ভাবনা। এই উদ্যোগের পিছনে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ। আন্তর্জাতিক স্তরের ভ্রমণ সংস্থাগুলির কাছে এই রাজ্যকে পরিচিত করার জন্য এই উদ্যোগ। মনে করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে রাজ্যের পর্যটন ব্যবসার একটি নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ এখন মিটিং, ইনসেন্টিভ, কনফারেন্স, কনভেনশন এবং এক্সিবিশন (এমআইসিই)-এর উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। বড় কনভেনশন সেন্টার, হোটেলে অনেক ঘর এবং আশপাশে বেড়ানোর জায়গা থাকলে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকদের সহজেই আকর্ষণ করতে পারে। এই সব জায়গায় শিল্পপতিরা শিল্পসভারও আয়োজন করতে পারেন। এই রাজ্যে তার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কত নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করেছেন গত কয়েক বছরে।
গত দু’বছর ধরে নিউটাউনে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে ডেস্টিনেশন ইস্ট-এর মূল অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ বছর আর ক’দিন পর যে ডেস্টিনেশন ইস্টের অনুষ্ঠান হবে, তার জন্যও বেছে নেওয়া হয়েছে ওই কনভেনশন সেন্টারকেই। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই পুজা কার্নিভাল, কলকাতা ক্রিস্টমাস ফেস্টিভ্যাল আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন উৎসবের চেহারা নিয়েছে।
১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলা এই ডেস্টিনেশন ইস্টের অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের ভ্রমণ সংস্থা, বিমান সংস্থা, বাণিজ্য প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন। চলবে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক, কী কী হবে ওই দিনগুলিতে।
প্রথম দিন আন্তর্জাতিক স্তরের উপভোক্তারা এসে পৌঁছবেন কলকাতায়। পরের দিন তাঁদের কলকাতা ঘুরিয়ে দেখানো হবে, যার পোশাকি নাম হল কলকাতা ফ্যামিলিয়ারাইজেশন ট্যুর। ১৩ জানুয়ারি হবে ডেস্টিনেশন ইস্টের উদ্বোধন। ‘বেঙ্গল ট্যুরিজম গ্লোবাল মিট’ নামে পর্যটন সম্মেলন এবং বায়ার- সেলার মিট। পরের দিনও হবে বায়ার-সেলার মিট। ১৫ জানুয়ারি অতিথিদের বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হবে উত্তরবঙ্গ, শান্তিনিকেতন, বিষ্ণুপুর, সুন্দরবন, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি এলাকায়। এছাড়াও থাকবে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের ব্যবস্থা। ১৮ জানুয়ারি অতিথিরা ফিরে আসবেন। পরের দিন যে যাঁর জায়গায় ফিরে যাবেন।
Comments are closed.