সচিত্র ভোটার কার্ডই নাগরিকত্বের প্রমাণ, জানাল মুম্বইয়ের আদালত

সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রই নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যথেষ্ট, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে খালাস করে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য মুম্বই আদালতের।
অসমে এনআরসিতে নাম না ওঠা জাবেদা বেগম নামে এক মহিলার মামলার প্রেক্ষিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি গুয়াহাটি হাইকোর্ট জানিয়েছিল, জমির খাজনা প্রদানের রসিদ, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের কাগজপত্র থেকে সচিত্র ভোটার কার্ড, কোনওকিছুই নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয়। এদিকে মুম্বই আদালত একটি মামলায় জানাল, সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দ্বারা নাগরিকত্ব প্রমাণ হতে পারে।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে জনৈক আব্বাস শেখ ও স্ত্রী রাবিয়া খাতুনকে আটক করেছিল মুম্বই পুলিশ। তাঁদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত নীতি লঙ্ঘনের দায়ে আটক করা হয়। প্রশ্ন ওঠে তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় মুম্বইয়ের এক আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক এ এইচ কাশিকর জানান, আধার, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা রেশন কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, তবে সচিত্র ভোটার কার্ড দিয়ে একজনের নাগরিকত্ব প্রমাণিত হতে পারে। এই মামলায় আব্বাস শেখ ও রাবিয়া খাতুনকে বেকসুর খালাসও করে দেয় আদালত।
আদালতে মুম্বই পুলিশের তরফে জানানো হয়, ২০১৭ সালের মার্চে তাদের কাছে সূত্র মারফত খবর আসে, কয়েকজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মুম্বইয়ের রিয়ে রোড এলাকায় বসবাস করছেন। পুলিশের অভিযোগ, অভাবের তাড়নায় বাংলাদেশ থেকে কোনও যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই এঁরা মুম্বইতে আসেন। এদিকে, অভিযুক্ত আব্বাস শেখ তাঁর আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবুক, রেশন কার্ড জমা দেন আদালতে। তাঁর স্ত্রী রাবিয়া খাতুন আধার কার্ড, প্যান কার্ডের সঙ্গে ভোটার কার্ড জমা দেন। এই প্রসঙ্গে আদালত জানায়, একটি ভোটার কার্ডের দ্বারা নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়া সম্ভব। কারণ, নির্বাচনী কার্ড বা ভোটার কার্ডের জন্য কাউকে আবেদন করতে হলে রিপ্রেজেন্টশন অফ পিপল অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রমাণ করতে হয় যে, তিনি এ দেশের নাগরিক। ঘোষণা ভুয়ো প্রমাণিত হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধের আওতায় পড়ে। তাই ভুয়ো ভোটার কার্ড প্রমাণিত না হলে এটাই নাগরিকত্বের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেন বিচারক এ এইচ কাশিকর।

পাশাপাশি বাংলাদেশি সন্দেহে আটক হওয়া ওই দম্পতিকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়ে আদালত জানায়, তাঁদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট রুল এবং ফরেনার্স অ্যাক্টে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তার যোগ্য প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগকারীরা।

Comments are closed.