কলকাতা শহর থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার রাস্তা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা। জঙ্গলে ঘেরা প্রকৃতির এক অপূর্ব সৌন্দর্যের নিদর্শন রয়েছে গড়বেতা টাউনের কাছেই গনগনি। কাছেই শিলাবতী নদী। এই শিলাবতী নদীর স্রোত ও দিক পরিবর্তনের ফলে কয়েক হাজার বছর ধরে সৃষ্টি হয়েছে এক গভীর খাদের। চারদিকে লাল আর গেরুয়া মাটির পাহাড়ে ভাস্কর্য। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই খাদ যেন আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মিনি সংস্করণ।
অ্যারিজোনার বদলে গনগনি। কলোরাডোর পরিবর্তে শিলাবতী। পাথুরে পথ, রয়েছে সিঁড়িও। সেই সিঁড়ি বেয়ে বা পাথুড়ে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে নেমে আসা যায় নদীর একেবারে কাছে। স্থানীয় নাম শিলাই। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও কোমর সমান জল। এমনিতে শান্ত নদীটি বর্ষায় ভয়ঙ্ক্র হয়ে ওঠে। পুরুলিয়া থেকে উৎপন্ন হয়ে দ্বারকেশ্বরে মিশে নাম নিয়েছে শিলাবতী। তারপরে সে গিয়ে পড়েছে সাগরে। মানবাজার রোডের ঠিক মাঝে রয়েছে কদম দেউলি বাঁধ। এটি শিলাবতীর উপর দিয়ে গিয়েছে। শীতের সকালে নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা যাবে। হরেক রকম পাখির কলকাকলি আপনাকে নিয়ে যাবে কোন সুদূরের দেশে। সিঁড়ি বেয়ে অনেক নীচে হারিয়ে যাওয়ার কোনও মানা নেই। দেখে মনে হবে, কেউ তৈরি করেছে এই খাদ। কিন্তু না, আপনা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে এই ক্যানিয়ন।
নদীর বুকে জেগেছে চড়া, সেই চড়ায় স্থানীয় মানুষ চাষবাস করে।
সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময় মাটির গেরুয়া রঙ আর সূর্যের লাল রঙ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। সে এক মনোরম দৃশ্য। গনগনি থেকে কাছাকাছি কয়েকটি প্রাচীন মন্দিরও দেখে আসা যায়।
নদীর ওপারের গ্রামের নাম ভিখনগর। কথিত আছে, পাণ্ডবরা অজ্ঞাতবাসের সময় এখানে ছিলেন কিছুদিন। একদিন যুধিষ্ঠির নদীর তীরে এক ব্রাহ্মণকে কাঁদতে দেখে কারণ জানতে চান। ব্রাহ্মণ জানান, নদীর অপর পাড়ে বক নামে এক রাক্ষস আছে। সে রোজ একজন করে মানুষ খায়। আজ তাঁর পালা। ব্রাহ্মণের মুখে যুধিষ্ঠির ক্রুদ্ধ হয়ে ভাই ভীমকে পাঠান বক রাক্ষসকে হত্যা করার জন্য। জেষ্ঠ্য ভ্রাতার নির্দেশ মেনে ভীম যান রাক্ষস বধ করতে। দু’জনের মধ্যে প্রবল যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধের ফলেই গনগনির এই গভীর খাদের সৃষ্টি হয়।
গনগনির ঐতিহাসিক গুরত্বও কম নয়। চুয়ার-লায়েক বিদ্রোহের অন্যতম সর্দার অচল সিংহ দলবল নিয়ে গনগনির ঘন শালের বনে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। তিনি গেরিলা কায়দায় যুদ্ধ করে ইংরেজদের রাতের ঘুম কেড়ে নেন। পরে বগড়ির রাজা ছত্র সিংহ অচলদের ধরিয়ে দেন। এই গনগনিতেই ইংরেজরা অচল ও তাঁর শাগরেদদের ফাঁসি দিয়েছিল।
গড়বেতা স্টেশন থেকে মেঠো পথ ধরে চার কিমি পথ গেলেই দেখা পেয়ে যাবেন এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের। স্টেশনে টোটো পাওয়া যায়। যে সব ট্রেন খড়্গপুর হয়ে বাঁকুড়া,পুরুলিয়া যায়, সেদিকেই পড়ে গড়বেতা। শালিমার থেকে ঘণ্টা আড়াই সময় লাগে। কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরত্ব। সোজা গাড়ি নিয়েও চলে আসা যায়। গাড়ি রাখার জায়গা আছে। রাজ্য পর্যটন দফতর গনগনিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। থাকার জায়গা তৈরি করা হচ্ছে। আশপাশে এখন ছোটখাট হোটেল আছে। শীতকালে অনেকে এখানে পিকনিক করতে আসেন দল বেঁধে। সকালে এসে রাতে ফিরে যেতে পারেন। একদিনের ট্যুর হিসেবে খারাপ লাগবে না।
নদীর বুকে জেগেছে চড়া, সেই চড়ায় স্থানীয় মানুষ চাষবাস করে।
সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময় মাটির গেরুয়া রঙ আর সূর্যের লাল রঙ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। সে এক মনোরম দৃশ্য। গনগনি থেকে কাছাকাছি কয়েকটি প্রাচীন মন্দিরও দেখে আসা যায়।
নদীর ওপারের গ্রামের নাম ভিখনগর। কথিত আছে, পাণ্ডবরা অজ্ঞাতবাসের সময় এখানে ছিলেন কিছুদিন। একদিন যুধিষ্ঠির নদীর তীরে এক ব্রাহ্মণকে কাঁদতে দেখে কারণ জানতে চান। ব্রাহ্মণ জানান, নদীর অপর পাড়ে বক নামে এক রাক্ষস আছে। সে রোজ একজন করে মানুষ খায়। আজ তাঁর পালা। ব্রাহ্মণের মুখে যুধিষ্ঠির ক্রুদ্ধ হয়ে ভাই ভীমকে পাঠান বক রাক্ষসকে হত্যা করার জন্য। জেষ্ঠ্য ভ্রাতার নির্দেশ মেনে ভীম যান রাক্ষস বধ করতে। দু’জনের মধ্যে প্রবল যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধের ফলেই গনগনির এই গভীর খাদের সৃষ্টি হয়।
গনগনির ঐতিহাসিক গুরত্বও কম নয়। চুয়ার-লায়েক বিদ্রোহের অন্যতম সর্দার অচল সিংহ দলবল নিয়ে গনগনির ঘন শালের বনে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। তিনি গেরিলা কায়দায় যুদ্ধ করে ইংরেজদের রাতের ঘুম কেড়ে নেন। পরে বগড়ির রাজা ছত্র সিংহ অচলদের ধরিয়ে দেন। এই গনগনিতেই ইংরেজরা অচল ও তাঁর শাগরেদদের ফাঁসি দিয়েছিল।
গড়বেতা স্টেশন থেকে মেঠো পথ ধরে চার কিমি পথ গেলেই দেখা পেয়ে যাবেন এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের। স্টেশনে টোটো পাওয়া যায়। যে সব ট্রেন খড়্গপুর হয়ে বাঁকুড়া,পুরুলিয়া যায়, সেদিকেই পড়ে গড়বেতা। শালিমার থেকে ঘণ্টা আড়াই সময় লাগে। কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরত্ব। সোজা গাড়ি নিয়েও চলে আসা যায়। গাড়ি রাখার জায়গা আছে। রাজ্য পর্যটন দফতর গনগনিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। থাকার জায়গা তৈরি করা হচ্ছে। আশপাশে এখন ছোটখাট হোটেল আছে। শীতকালে অনেকে এখানে পিকনিক করতে আসেন দল বেঁধে। সকালে এসে রাতে ফিরে যেতে পারেন। একদিনের ট্যুর হিসেবে খারাপ লাগবে না।
Comments are closed.