ডায়মন্ডহারবার যাওয়ার পথে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রেক্ষিতে ওই এলাকায় ডিউটিরত ৩ আইপিএস অফিসারকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা।
নির্বাচনের আগে আইপিএস অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত নতুন নয়। কিন্তু এবার ভোটের বহু আগে আইপিএস অফিসারদের কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব রীতিমতো বেনজির। এই বিতর্কে এবার নয়া মাত্রা যোগ করছে রাজ্যপালের কিছু পদক্ষেপ।
সূত্রের খবর, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের দফতর থেকে জন্মদিন জানতে চেয়ে ফোন যাচ্ছে বিভিন্ন আইপিএস অফিসারের কাছে!
রাজভবন থেকে রাজ্যে কর্মরত বাছাই করা আইপিএসদের ফোন করা হচ্ছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে তাঁদের জন্মদিন কবে। এই খবর পৌঁছেছে নবান্নতেও। নবান্নতে এই খবরও পৌঁছেছে, এবছর পুজোর পর রাজ্যপাল ধনখড় বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে কার্ড পাঠিয়েছেন একাধিক শীর্ষ আমলাকে। আইপিএস অফিসারদের বিজয়ার শুভেচ্ছা জানানো বা জন্মদিন চাওয়ার ঘটনা ভালোভাবে দেখছে না নবান্ন। প্রশাসনের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি নির্বাচনের আগে রাজ্যে পছন্দের আইপিএস অফিসারদের তালিকা তৈরি করতে চাইছেন রাজ্যপাল?
এর মধ্যেই রবিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নিজের ট্যুইটে ১৯ জন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসারের একটি তালিকা তুলে দিয়েছেন, যাঁরা অবসরের পর বিভিন্ন সাম্মানিক পদে রয়েছেন।
একদিকে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএসদের তালিকা ট্যুইট, আবার অন্যদিকে কর্মরত আইপিএসদের ফোন করে জন্ম তারিখ জানতে চাওয়া। কী চাইছে রাজভবন?
এর আগে এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জ্ঞ্যানবন্ত সিংহের নাম করে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর বিরুদ্ধে চলা তদন্তের গতি প্রকৃতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বহু অফিসার রাজ্যে শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন।
রাজভবন থেকে কোনও আমলাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর ঘটনা বিরল। তাহলে কি রাজ্যের সমস্ত আইপিএসের কাছেই এমন ফোন গেছে? যদি তা না হয় তাহলে আচমকা এই উদ্যোগের কারণ কী? ইদানীং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নিয়ম করে রাজ্যের আমলা মহলকে সতর্ক করছেন, যাতে তাঁরা আইনের শাসন রক্ষায় রাজনীতি না দেখেন। এই প্রেক্ষিতে কয়েকজন বাছাই করা আইপিএস অফিসারের কাছে জন্ম তারিখ জানতে চাওয়ার ঘটনায় আমলা মহলে সাড়া পরে গিয়েছে। অবসরপ্রাপ্তদের মতোই কর্মরত আইপিএসদের তালিকাও কি প্রকাশ করবেন জগদীপ ধনখড়?
পুজোর আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি শিলিগুড়িতে দলীয় বৈঠকে উত্তরবঙ্গের নেতাদের তৃণমূল ঘনিষ্ঠ পুলিশের লিস্ট তৈরি করতে বলেছেন। অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস তথা বর্তমান বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ লিস্ট ফাইনাল করবেন। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু, রাজু ব্যানার্জিরা নিয়ম করে পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। রাজ্যপাল সরাসরি আঙ্গুল তুলছেন বাংলার আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণের দিকে। এই প্রেক্ষিতে ঠিক ভোটের মুখে বাছাই আইপিএসদের কাছে জন্মদিন জানতে চেয়ে ফোন গোটা বিষয়টিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে।
Comments are closed.