আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতাল কাল কুঠুরির চেয়েও ভয়াবহ! পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের, আতঙ্ক ঠেকাতে কম পরীক্ষার সওয়াল গুজরাত সরকারের

করোনা পরিস্থিতিতে ক্রমশ অস্বস্তি বাড়ছে মোদী-শাহের রাজ্য গুজরাতের। প্রথমে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস চালানোর যন্ত্রকে ভেন্টিলেটর হিসেবে ব্যবহার করে খবরের শিরোনামে এসেছিল গুজরাত। তারপরও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না দেশের অন্যতম শিল্পোন্নত এই রাজ্যের। এবার হাইকোর্টে আরও চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি উঠে এল সরকারি তরফে। গুজরাত হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল স্বীকার করে নিলেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো রুখতে ইচ্ছাকৃতভাবেই কম নমুনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। এজলাসে দাঁড়িয়ে এহেন স্বীকারোক্তিতে চরম বিড়ম্বনায় গুজরাতের বিজেপি সরকার।

সম্প্রতি গুজরাত হাইকোর্টে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়। সেই মামলায় গত শুক্রবার বিচারপতিরা আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালের পরিকাঠামোকে কালকুঠুরির চেয়েও ভয়ঙ্কর বলে পর্যবেক্ষণে লেখেন। সামগ্রিক করোনা মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। সেই সূত্রেই আসে কম নমুনা পরীক্ষার প্রসঙ্গ। তাতেই এই চাঞ্চল্যকর বক্তব্য রাখেন রাজ্যের এজি কমল ত্রিবেদী।

এক্ষেত্রে রুপানি সরকারের যুক্তি, বেশি পরীক্ষা হলে ৭০ শতাংশ মানুষেরই রিপোর্ট পজিটিভ আসবে। এমনিতেই গুজরাত করোনার সংক্রমণে দেশের তালিকায় একেবারের উপরের দিকে। তার উপর যদি লাগাতার পজিটিভি রিপোর্ট আসতে থাকে তাহলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন। অভিযোগ, রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াতে দিচ্ছে না। তা নিয়ে আদালতের পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছে আহমেদাবাদের হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলোর সংগঠনও।

আদালতের এই তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণকে হাতিয়ার করে মোদীর গুজরাত মডেলকে তুলে ধরে বিজেপিকে আক্রমণে দেরি করেনি কংগ্রেসও। মৃতের সংখ্যার ক্ষেত্রে দেশে মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে মোদীর রাজ্য। এ পর্যন্ত গুজরাতে করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮৫৮ জনের। রবিবার মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। তার মধ্যে ২৮ জনই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন আহমেদাবাদে। অভিযোগ, পরিকাঠামো, ডাক্তার, যন্ত্রপাতি, নার্সের অভাবে সিভিল হাসপাতালে একের পর এক করোনা সংক্রমিতের মৃত্যু হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আহমেদাবাদ শহরের সিংহভাগই পড়ছে গান্ধীনগর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। যে কেন্দ্রের সাংসদ অমিত শাহ।

Comments are closed.