এবার বর্ষায় পদ্মায় জাল ফেললেই উঠে আসছে ইলিশ। ভোলা-চাঁদপুর-শরিয়তপুরের নদীগুলির ঘোলা জলও এখন রুপোলি শস্যে ভরপুর। তার চেয়েও ভালো খবর, এপার বাংলাকে এবার সেই ইলিশের এবার ভাগ দিচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজোর আগেই এপার বাংলার হেঁশেলে ঢুকবে প্রায় দেড় হাজার টন পদ্মার ইলিশ।
গত সাত বছরে তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। ‘পানি দিন, ইলিশ দিমু’এমন কথাও শোনা গিয়েছে জলবণ্টন চুক্তির সমঝোতায়। কিন্তু জট প্রায় একই ছিল। পদ্মার চকচকে পাতলা ইলিশ আসেনি এপারে। গত বর্ষার মরশুমে নামমাত্র ৫০০ টন ইলিশ ঢুকেছিল রাজ্যে। কিন্তু এবার বাংলাদেশে ইলিশ উদ্বৃত্ত। তার একটা বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গে পাঠাতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আগামী এক মাসে প্রায় ১৫ লক্ষ কেজি ইলিশ রাজ্যে ঢুকবে বলে খবর। যা বোঝা যাচ্ছে মধ্যবিত্ত বাঙালির পকেটের নাগালের মধ্যেই থাকবে পদ্মার ইলিশের দর। তবে ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ও হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলছেন, এখনই বলা যাবে না পদ্মার ইলিশের দর কত হবে। গত বছর যে মাছ এসেছিল, তার দর ছিল ওজন অনুযায়ী। কেজি প্রতি প্রায় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এটা ছিল পাইকারি দর। এবার বাংলাদেশের রফতানিকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে ভারতের আমদানিকারী সংস্থাগুলির চুক্তির উপর নির্ভর করবে ইলিশের দাম।
বর্ষা মরসুম শেষের দিকে। এবার গঙ্গা কিংবা রূপনারায়ণ অথবা দিঘার সমুদ্রেও তেমন ধরা দিচ্ছে না ইলিশ। প্রায় একই অবস্থা ডায়মন্ডহারবার কিংবা কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীদেরও। তাই বাজারে ইলিশের চাহিদা ও জোগানের বিস্তর ফারাক। কিন্তু বাংলাদেশে ছবিটা পুরো উলটো। ২০ মে থেকে ২২ জুলাই ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে বাংলাদেশে। ২৩ জুলাই রাত থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠার পরেই ইলিশ ধরার ধুম পড়ে যায় বাংলাদেশে। জানা যাচ্ছে, গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি ইলিশ উঠছে। তাই রুপোলী শস্যের রফতানির ক্ষেত্রে এবার বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে।
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নার্গিস মুরশিদা ইলিশ রফতানিকারী সংস্থাগুলিকে জানিয়েছেন, ২০১৮-২১ সালের রফতানি নীতি অনুযায়ী ইলিশ পাঠাতে হবে। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সংস্থাগুলি কত মাছ বিক্রি করবে তার পরিমাণও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাই পুজোর মধ্যেই এপার বাংলার পাতে শোভা বাড়াবে পদ্মার ইলিশের নানা পদ। সেই কাউন্টডাউনও শুরু হয়ে গিয়েছে।
Comments are closed.