ব্রিটিশ আমলে তৈরি ভারতীয় দণ্ডবিধির পুনর্গঠনের পথে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর, ব্রিটিশ আমলে গড়া ভারতীয় আইন-বিধি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খুঁটিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
২০ শে অক্টোবর সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রবর্তিত ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ওই শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ব্রিটিশ আমলে ‘প্রভু ও দাস’ এই নীতির ভিত্তিতেই আইন নির্মাণ করা হয়। তাই এইসব আইনের পুনর্গঠন করতে চাইছে কেন্দ্র।
‘দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি আইপিসির বিভিন্ন ধারা পরিবর্তনের জন্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের মতামত চেয়েছে কেন্দ্র। প্রত্যেক ও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পাশাপাশি, আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই আধিকারিকের কথায়, ইংরেজ আমলে ‘প্রভু-দাস’ সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে তৈরি হওয়া আইপিসি বা ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তন আবশ্যিক বলে মনে করেছে অমিত শাহের দফতর। ব্রিটিশ আমলে প্রবর্তিত ভারতীয় দণ্ডবিধি তৈরির পর এগুলি আর পুরোপুরি সংশোধন হয়নি। শুধুমাত্র কয়েকটি সংশোধন বা বাতিল হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারি ওই আধিকারিক বলেন, ধরা যাক, রাস্তায় কোনও গয়না বা ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। কিছু ক্ষেত্রে এমন ছোট অপরাধেই দোষীকে বিরাট শাস্তি দেওয়া হয়। অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে আইন সংশোধন জরুরি বলে মনে করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত্র শাহের মন্তব্যেও এই আইন সংশোধনের কথা উঠে এসেছে। গত ২৮ শে সেপ্টেম্বর দিল্লির এক অনুষ্ঠান থেকে অমিত শাহ বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি ও ফৌজদারি আইনের সংশোধন প্রয়োজন। তিনি মন্তব্য করেন, ব্রিটিশ আমলে পুলিশ নিজেদের স্বার্থরক্ষায় নজর দিয়েছিল, কিন্তু এখন তাদের কর্তব্য সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে ৩৪ হাজার পুলিশকর্মী তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সব মিলিয়ে ব্রিটিশ প্রবর্তিত আইনের সংশোধন জরুরি বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
Comments are closed.