জেএনইউয়ে হামলাকারী কারা? হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিনশটে বেকায়দায় বিজেপি, পাল্টা অভিযোগ বামেদের বিরুদ্ধে! তদন্তে পুলিশ
রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের উপর নৃশংস হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। কিন্তু বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের গড় বলে পরিচিত দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালালো কারা, এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। নিগৃহীত পড়ুয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ সরাসরি এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন আরএসএসের ছাত্র শাখা এবিভিপি এবং বিজেপিকে। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, হামলাকারীরা বামপন্থী। আরও এক কদম এগিয়ে গেরুয়া বাহিনী ঘটনার দায় চাপিয়েছে নকশালদের ঘাড়ে।
আর এই গোটা ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে যাওয়া একাধিক হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট (JNU Whatsapp Controversy)। যাতে ঘটনার পিছনে এবিভিপি-আরএসএসের ইন্ধন এবং সমগ্র কর্মকাণ্ড পরিচালনার নেপথ্যে গেরুয়া বাহিনীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিনশটের সত্যাসত্য খতিয়ে দেখেনি thebengalstory। পুলিশি তদন্তে তা স্পষ্ট হবে বলে আশা করা যায়।
ইংরেজি নিউজ পোর্টাল scroll.in এ প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। যেখানে ট্রু কলার এবং ফেসবুকের সাহায্যে বেশ কয়েকটি নম্বরকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
ফ্রেন্ডস অফ আরএসএস নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট এই মুহূর্তে শিরোনামে। সেখানে এক ব্যক্তি লিখছেন, বাম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবাই এই গ্রুপে যোগ দিন। ওদের মার দেওয়া উচিত। এটাই ওদের আসল দাওয়াই।
উত্তরে একজন লেখেন, ডিইউয়ের লোকজনকে নিয়ে খজন সিংহ সুইমিং সাইড দিয়ে ঢুকছি। আমরা এখানে ২৫-৩০ জন আছি। সম্ভবত ডিইউ বলতে দিল্লি ইউনিভার্সিটির কথা বোঝানো হয়েছে বলে জানাচ্ছে প্রতিবেদন। আর খজন সিংহ সুইমিং অ্যাকাডেমি জেএনইউয়ের ভিতরেই অবস্থিত। সেখানে ঢোকার একটি পৃথক গেট আছে। জেএনইউয়ের মেন গেট দিয়ে ঢুকতে গেলে চেকিংয়ের মুখে পড়তে হয়।
প্রতিবেদনে এই বক্তব্য রাখা ব্যক্তির নম্বর চিহ্নিত করা হয়েছে ট্রু কলারের সাহায্য নিয়ে। নম্বরটি জনৈক বিকাশ প্যাটেলের। ফেসবুক প্রোফাইল থেকে scroll.in জানতে পেরেছে, ওই ব্যক্তি এবিভিপির এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য এবং জেএনইউ এবিভিপির প্রাক্তন সহ সভাপতি। scroll.in এই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বরটি সুইচড অফ পায়।
এরকমই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়ানো একাধিক হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট (JNU Whatsapp Controversy) নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে প্রতিবেদন জুড়ে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, যদি গোপনীয়তার সঙ্গেই কাজটি করা হয়ে থাকে, তাহলে এই স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে এল কীভাবে? জানা গিয়েছে এই ধরনের গ্রুপে যোগ দেওয়ার জন্য একটি আমন্ত্রণ লিঙ্ক প্রকাশ্যে শেয়ার করা হয়েছিল। ফলে যাঁরা সেই লিঙ্ক ধরে পেজে পৌঁছন, তাঁরাই গ্রুপের সদস্য হয়ে যেতে পেরেছেন। গ্রুপে কথাবার্তাও তাঁদের সামনেই চলতে থাকে। কিন্তু দ্রুতই বাইরের লোকের উপস্থিতি টের পেয়ে যায় গ্রুপ অ্যাডমিনরা। সঙ্গে সঙ্গে গ্রুপে অংশগ্রহণকারীরা সতর্ক হয়ে যায় বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এদিকে এই স্ক্রিনশটগুলোকে (JNU Whatsapp Controversy) ভুয়ো বলে দাবি করেছে এবিভিপি। তাদের পাল্টা অভিযোগ, বামপন্থী নকশালরা আরএসএস-এবিভিপিকে বদনাম করতেই তাদের গ্রুপের নাম বদলে এসব ঘটিয়েছে।
কারা সত্যি বলছে তা তদন্ত সাপেক্ষ। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার, জেএনইউ কাণ্ড নিয়ে ফের আগুন জ্বলতে চলেছে রাজধানী দিল্লিতে। যে আগুনের আঁচে ইতিমধ্যে তেতে উঠেছে সারা দেশ।
Comments are closed.