মমতা: যা বুঝতে পারছি, সম্ভবত লকডাউন উঠছে না, আগামী ২-৩ সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ

সম্ভবত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বৃহস্পতিবার এমনই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, আগামী ২-৩ সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই লকডাউন কোনওভাবেই অমান্য করা যাবে না। তবে এর মধ্যেও জরুরি ভিত্তিতে পণ্য সরবরাহের স্বার্থে পণ্য পরিবহণে আংশিক ছাড় দেওয়া হবে বলে নবান্ন থেকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের প্রস্তাবিত বৈঠকে লকডাউনের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে জানা যাবে।
করোনাভাইরাস এবং তা সামলাতে দেশজুড়ে লকডাউনের জোড়া ধাক্কায় বিপর্যস্ত শিল্পক্ষেত্র। বন্ধ কল-কারখানা, বেতন দিতে গিয়ে নাভিশ্বাস শিল্পপতিদের। অনেক ক্ষেত্রেই চলছে ছাঁটাই। এই পরিস্থিতিতে বাণিজ্য সংগঠন, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প সংগঠন, কৃষি উৎপাদনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে জরুরি পরিষেবা জারি রাখতে প্রয়োজনীয় দিশা নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। নিজেদের উদ্বেগের কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান শিল্পকর্তা থেকে কৃষি সংগঠনের কর্তারা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ব্যবসায়িক সংগঠনের কর্তাদের কাছে প্রস্তাব দেন, রাজ্যের প্রতিটি বাজারের ঢোকা-বেরোনোর রাস্তায় নিজেদের উদ্যোগে স্যানিটাইজার এবং জলের ব্যবস্থা রাখুন। উপস্থিত প্রতিনিধিরা তাতে রাজি হয়েছেন।
পাশাপাশি, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাণিজ্য সংগঠনের বিভিন্ন প্রস্তাব লিখিতভাবে মুখ্যসচিবের কাছে পাঠালে, তা বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, রাজ্যে চা বাগানগুলোতে ১৫ শতাংশ কর্মীকে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে তাঁরা কাজ করতে পারবেন বাগানে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রান্না কিংবা খাবার পরিবেশনের কাজ যাঁরা করছেন, তাঁরাও সরকারি বিমার আওতায় আসবেন।
বিভিন্ন পরিষেবার লাইসেন্সের মেয়াদ নবীকরণের শেষ তারিখ ছিল ৩০ মার্চ। কিন্তু লকডাউনের জেরে বহু মানুষ লাইসেন্স রিনিউ করাতে পারেননি। এই সমস্যা সমাধানে লাইসেন্স পারমিশন দেওয়ার মেয়াদ ৩০ জুন অবধি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মমতা ব্যানার্জি জানান, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৩। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ জন। ৮৩ জনের মধ্যে ৮০ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
মমতা জানান, জরুরি পরিষেবা বজায় রাখার জন্য কাজ করছেন যাঁরা, তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। হোম ডেলিভারির জন্য ছোট টেম্পো কিংবা ট্যাক্সি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, সেখানে যেন কোনওভাবেই দূরত্ববিধি লঙ্ঘিত না হয়, বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.