মমতা: এনপিআরের সওয়াল করেছিলাম, কিন্তু আইনে বদল হয়েছে জানার পরই রাজ্যে বন্ধ এনপিআর, প্রাণ থাকতে রাজ্যে ডিটেনশন সেন্টার নয়
আমিও এনপিআর-এর জন্য সওয়াল করেছিলাম, কিন্তু পরে সেই আইন বদল হয়েছে। তাই রাজ্যে এনপিআর বন্ধ করে দিয়েছি। মানুষ বিপদে পড়বে এমন কোনও কাজ আমার দ্বারা হবে না।
শুক্রবার নৈহাটি উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। তাঁর কটাক্ষ, যাঁরা বলেন সার্টিফিকেট দিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ দিতে হবে, তাঁরা কোন সার্টিফিকেটের জোরে ক্ষমতায় এসেছেন? কোন সার্টিফিকেটের বলে তাঁরা এ দেশের নাগরিক, প্রশ্ন তোলেন মমতা। নাগরিকত্ব আইন ও এনসিআরের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনকে ফের সমর্থন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পড়ুয়াদের রোজ ভয় দেখানো হচ্ছে। তাঁদের হস্টেল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে!
মোদী সরকারকে বিঁধে মমতার প্রশ্ন, আঠারো বছর হয়ে গেলে ভোট দেওয়ার অধিকার পান দেশের যুব সম্প্রদায়। তাঁদের ভোটে মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কিন্তু তাঁরা গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করলে বাধা দিচ্ছে সরকার! এদিন মমতা আরও বলেন, তাঁর প্রাণ থাকতে বাংলায় একটিও ডিটেনশন ক্যাম্প হতে দেবেন না। তাঁর কথায়, আমি আমার জীবন দিতে রাজি আছি, কিন্তু ডিটেনশন ক্যাম্প হতে দেব না। তিনি বলেন, অসমে এনআরসি হয়েছিল সে রাজ্যেও বিজেপির সরকার ছিল বলে। মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মমতার ঘোষণা, তুমি দিল্লির শাসন করছ নির্বাচনে জিতে। এখানে আমরাও নির্বাচিত সরকার। তোমার অধিকার দিল্লিতে, আমার অধিকার এখানে।
পাশাপাশি, আধার কার্ড দিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ হবে না, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জবাবে মমতার ঘোষণা, আমি সেই লাইন দেব যেখানে আমার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। যে লাইনে মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় সেখানে লাইন দেব না। তাঁর কথায়, গণতন্ত্র মানে, সবাই নাগরিক, সবার সমান অধিকার। তাই নতুন করে নাগরিকত্ব প্রয়োজন নেই। মমতার কটাক্ষ, একজন নাগরিক, ক’টা কার্ড করবেন? তাঁর অভিযোগ, মানুষ-কে ‘কলের পুতুলের’ মতো ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এরপরই মমতা বলেন, প্রথমে তিনি এনপিআর-এ সায় দিয়েছিলেন তথ্যগত কারণে। কিন্তু পরে জানতে পারেন, আইন বদলে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই রাজ্যে এনপিআর স্থগিত রাখা হয়েছে।
নৈহাটি থেকে এদিন নাম না করে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ১৬ কোটি টাকা দিয়ে তৈরি নৈহাটি স্টেডিয়ামে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। এখানে বাঙালি, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
Comments are closed.