এরাজ্যে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের বাস মিস করেছে সিপিএম, আর তাকেই হাতিয়ার করে ব্রিগেড থেকে দিল্লি দখলের প্রস্তুতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই করে প্রতিষ্ঠা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে লড়াই জিতে বাংলায় প্রতিষ্ঠা করেছেন তৃণমূল সরকার। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের তৃতীয় যুদ্ধ। এযুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ বিজেপি। এযুদ্ধে বাংলায় আপাতত তাঁর কিছু হারানোর নেই, জেতার জন্য আছে দিল্লি। কিন্তু ঘটনাচত্রে এই লড়াই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দুই যুদ্ধের থেকে কম ভয়ঙ্কর কিছু নয়। বরং এই যুদ্ধে বেশি রক্তাক্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এরাজ্যে এসে নরেন্দ্র মোদী যখন ঘোষণা করেছিলেন, সমস্ত অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে বের করে দেবেন, তারপর আর এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট করেননি নির্বাচনী রাজনীতিতে পোড়খাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’ঘন্টার মধ্যে জবাব দিয়েছিলেন, ‘তুমি কোন হরিদাস পাল, ক্ষমতা থাকলে কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরাতাম।’ জবাব তো নয়, প্রত্যাঘাত! বাংলার রাজনীতি নিয়ে চর্চা করা মানুষ মাত্রই মানেন, অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হুঙ্কার-পাল্টা হুঙ্কারই সুর বেঁধে দিয়েছে এরাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশের। সেদিনই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, বাংলার রাজনীতিতে মেরুকরণ আসন্ন। এবং এই মেরুকরণ তৃণমূল বনাম বিজেপির তো বটেই, আরও অনেক কিছুর। নরেন্দ্র মোদীর অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে হুমকির প্রতিক্রিয়া দিতে প্রায় এক সপ্তাহ লেগেছিল সিপিএমের (যদিও কী প্রতিক্রিয়া আলিমুদ্দিন স্ট্রিট দিয়েছিল তা আর আজ কারও মনে নেই)। আর রাজনীতিতে এক সপ্তাহ কখনও কখনও দু’বছরেরও থেকেও বেশি সময়। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপিকে ‘অসভ্য বর্বরের দল’ বলে লড়াইয়ের সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। রাজ্যের মুসলিম মানুষের কাছে বার্তা চলে গিয়েছিল, সিপিএম লড়বে বিজেপির বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে এই কাজটাই করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বা জোড়া গির্জা স্টপেজে বিজেপি বিরোধী বাসটা এসে দাঁড়িয়েছিল, কিন্ত সিপিএম নেতারা তা মিস করলেন। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী, আরএসএসের প্রাক্তন প্রচারক নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এসে অনুপ্রবেশকারীদের রাজ্য ছাড়া করার হুমকি দেলেন, অথচ তার একটা জোরালো জবাব দিতে সময় নষ্ট করলে যা হওয়ার তাই হল, বাংলায় বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের মুখ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বার্তা চলে গেল গোটা মুসলিম সমাজের কাছেই।
এরপর এপার বাংলায় একটা বড় নির্বাচন হয়েছে বটে, ২০১৬ সালের বিধানসভা। কিন্তু সেখানে মাঠে-ময়দানের বাস্তব পরিস্থিতি যা ছিল, আর সংবাদমাধ্যমের একাংশ যা দেখাচ্ছিল তার মধ্যে ফারাকটা যে আকাশ-জমির, তা বুঝতে খুব বেশি দিন লাগেনি সবার। আর সেই কারণেই ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে রাজ্যে যত নির্বাচন হয়েছে, সর্বত্রই লড়াইটা কেন্দ্রীভূত হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে। তমলুক, কোচবিহার, উলুবেড়িয়া লোকসভা আসনই হোক, কিংবা কাঁথি দক্ষিণ, সবং, নোয়াপাড়া, মহেশতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হোক, বা ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, দিকে-দিকে বার্তা স্পষ্ট, বাংলার লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপির। আর এই জায়গাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিলেন এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।
দাবা খেলোয়াড় মাত্রই জানেন, সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলার সুবিধে। সুবিধে মানে আগে চাল দেওয়ার সুবিধে, আক্রমণাত্মক হওয়ার লাইসেন্স। সেটাই করলেন তৃণমূল নেত্রী। যে লড়াইটা বিজেপি দিল্লি থেকে বাংলায় এসে করবে বলে ঠিক করেছিল, সেটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে নিয়ে গেলেন। তাঁর হোম গ্রাউন্ডে বিজেপি এসে দাপিয়ে বেড়াবে, এই ছিল পরিস্থিতি। সেখান থেকে লড়াইটাকে প্রথমেই অ্যাওয়ে ম্যাচ করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। বাংলা থেকে দিল্লি দখলের ডাক দিলেন তিনি। দিল্লি যাতায়াত শুরু করলেন ঘন-ঘন। কালো নয়, নিজের ঘুঁটিটা পালটে সাদা করে নিলেন তিনি। হোম ম্যাচ তো তিনি খেলবেন ২০২১ সালে, তখন না হয় কালো ঘঁটি নেওয়া যাবে। আপাতত দিল্লির দখলের লড়াই। কারণ তিনি জানেন, আপাতত এরাজ্যে তাঁর হারানোর কিছু নেই, জেতার জন্য আছে দিল্লি।
আর এখান থেকেই ব্রিগেড সমাবেশের ডাক। ১৯ শে জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে কলকাতায় জমায়েত হবেন বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতারা। জাতীয় রাজনীতিতে দিন-দিন গুরুত্ব বাড়াচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। ব্রিগেডের ঠিক আগে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপির হার এবং উত্তর প্রদেশে তাঁর মডেলেই অখিলেশ-মায়াবতী জোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাড়তি অক্সিজেন দিয়েছে। সেই অক্সিজেন নিয়ে আপাতত তৃণমূল নেত্রীর লক্ষ্য দিল্লি, যার মঞ্চ ১৯ তারিখের ব্রিগেড। সেখান থেকেই আক্রমণাত্মক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী স্লোগান তোলেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে বিজেপি তো বটেই, রাহুল, সোনিয়াও।
২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এরাজ্যে এসে নরেন্দ্র মোদী যখন ঘোষণা করেছিলেন, সমস্ত অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে বের করে দেবেন, তারপর আর এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট করেননি নির্বাচনী রাজনীতিতে পোড়খাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’ঘন্টার মধ্যে জবাব দিয়েছিলেন, ‘তুমি কোন হরিদাস পাল, ক্ষমতা থাকলে কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরাতাম।’ জবাব তো নয়, প্রত্যাঘাত! বাংলার রাজনীতি নিয়ে চর্চা করা মানুষ মাত্রই মানেন, অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হুঙ্কার-পাল্টা হুঙ্কারই সুর বেঁধে দিয়েছে এরাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশের। সেদিনই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, বাংলার রাজনীতিতে মেরুকরণ আসন্ন। এবং এই মেরুকরণ তৃণমূল বনাম বিজেপির তো বটেই, আরও অনেক কিছুর। নরেন্দ্র মোদীর অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে হুমকির প্রতিক্রিয়া দিতে প্রায় এক সপ্তাহ লেগেছিল সিপিএমের (যদিও কী প্রতিক্রিয়া আলিমুদ্দিন স্ট্রিট দিয়েছিল তা আর আজ কারও মনে নেই)। আর রাজনীতিতে এক সপ্তাহ কখনও কখনও দু’বছরেরও থেকেও বেশি সময়। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপিকে ‘অসভ্য বর্বরের দল’ বলে লড়াইয়ের সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। রাজ্যের মুসলিম মানুষের কাছে বার্তা চলে গিয়েছিল, সিপিএম লড়বে বিজেপির বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে এই কাজটাই করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বা জোড়া গির্জা স্টপেজে বিজেপি বিরোধী বাসটা এসে দাঁড়িয়েছিল, কিন্ত সিপিএম নেতারা তা মিস করলেন। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী, আরএসএসের প্রাক্তন প্রচারক নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এসে অনুপ্রবেশকারীদের রাজ্য ছাড়া করার হুমকি দেলেন, অথচ তার একটা জোরালো জবাব দিতে সময় নষ্ট করলে যা হওয়ার তাই হল, বাংলায় বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের মুখ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বার্তা চলে গেল গোটা মুসলিম সমাজের কাছেই।
এরপর এপার বাংলায় একটা বড় নির্বাচন হয়েছে বটে, ২০১৬ সালের বিধানসভা। কিন্তু সেখানে মাঠে-ময়দানের বাস্তব পরিস্থিতি যা ছিল, আর সংবাদমাধ্যমের একাংশ যা দেখাচ্ছিল তার মধ্যে ফারাকটা যে আকাশ-জমির, তা বুঝতে খুব বেশি দিন লাগেনি সবার। আর সেই কারণেই ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে রাজ্যে যত নির্বাচন হয়েছে, সর্বত্রই লড়াইটা কেন্দ্রীভূত হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে। তমলুক, কোচবিহার, উলুবেড়িয়া লোকসভা আসনই হোক, কিংবা কাঁথি দক্ষিণ, সবং, নোয়াপাড়া, মহেশতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হোক, বা ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, দিকে-দিকে বার্তা স্পষ্ট, বাংলার লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপির। আর এই জায়গাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিলেন এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।
দাবা খেলোয়াড় মাত্রই জানেন, সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলার সুবিধে। সুবিধে মানে আগে চাল দেওয়ার সুবিধে, আক্রমণাত্মক হওয়ার লাইসেন্স। সেটাই করলেন তৃণমূল নেত্রী। যে লড়াইটা বিজেপি দিল্লি থেকে বাংলায় এসে করবে বলে ঠিক করেছিল, সেটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে নিয়ে গেলেন। তাঁর হোম গ্রাউন্ডে বিজেপি এসে দাপিয়ে বেড়াবে, এই ছিল পরিস্থিতি। সেখান থেকে লড়াইটাকে প্রথমেই অ্যাওয়ে ম্যাচ করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। বাংলা থেকে দিল্লি দখলের ডাক দিলেন তিনি। দিল্লি যাতায়াত শুরু করলেন ঘন-ঘন। কালো নয়, নিজের ঘুঁটিটা পালটে সাদা করে নিলেন তিনি। হোম ম্যাচ তো তিনি খেলবেন ২০২১ সালে, তখন না হয় কালো ঘঁটি নেওয়া যাবে। আপাতত দিল্লির দখলের লড়াই। কারণ তিনি জানেন, আপাতত এরাজ্যে তাঁর হারানোর কিছু নেই, জেতার জন্য আছে দিল্লি।
আর এখান থেকেই ব্রিগেড সমাবেশের ডাক। ১৯ শে জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে কলকাতায় জমায়েত হবেন বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতারা। জাতীয় রাজনীতিতে দিন-দিন গুরুত্ব বাড়াচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। ব্রিগেডের ঠিক আগে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপির হার এবং উত্তর প্রদেশে তাঁর মডেলেই অখিলেশ-মায়াবতী জোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাড়তি অক্সিজেন দিয়েছে। সেই অক্সিজেন নিয়ে আপাতত তৃণমূল নেত্রীর লক্ষ্য দিল্লি, যার মঞ্চ ১৯ তারিখের ব্রিগেড। সেখান থেকেই আক্রমণাত্মক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী স্লোগান তোলেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে বিজেপি তো বটেই, রাহুল, সোনিয়াও।
Comments are closed.