মুকুল রায় এবং তাঁর শ্যালকের বিরুদ্ধে রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই মামলায় কি রেল হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক বা কর্মীও যুক্ত? সিআইডির প্রাথমিক তদন্তের পর এই প্রশ্নই উঠছে। রেলে চাকরি দিয়ে একাধিক যুবকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে গত শুক্রবার দিল্লি থেকে পুলিশ মুকুল রায়ের নিজের শ্যালক সৃজন রায়কে গ্রেফতার করে। একই অভিযোগ রয়েছে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধেও।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার এবং বুধবার সিআইডি অফিসাররা কলকাতার বি আর সিংহ হাসপাতাল, কাঁচড়াপাড়া রেল হাসপাতাল, শিয়ালদহে রেলের অফিসসহ একাধিক জায়গায় সৃজন রায়কে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালান। তল্লাশি চালিয়ে সিআইডি অফিসাররা প্রচুর কাগজ-পত্র বাজেয়াপ্ত করেছেন। তার মধ্যে যেমন একাধিক ভুয়ো অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার রয়েছে, তেমনই রয়েছে প্রচুর মেডিকেল সার্টিফিকেট। সিআইডি সূত্রের খবর, রেলে চাকরি দেওয়ার জন্য একাধিক অভিযোগকারীকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সবকটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারই জাল। পাশাপাশি, সিআইডি অফিসাররা তদন্তে জানতে পেরেছেন, যাঁদের চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, রেলেরই তিনটি হাসপাতালে তাঁদের মেডিকেল টেস্টও হয়েছিল। তার মধ্যে দুটি হাসপাতাল এ’রাজ্যে, একটি হাসপাতাল বিহারে। এ’রাজ্যের শিয়ালদহ বি আর সিংহ হাসপাতাল এবং কাঁচড়াপাড়া রেল হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা হয়েছিল অভিযোগকারীদের। সিআইডি অফিসাররা শিয়ালদহ বি আর সিংহ হাসপাতাল এবং কাঁচড়াপাড়া রেল হাসপাতালেও তল্লাশি চালান। বিহারের একটি হাসপাতালেও চাকুরিপ্রার্থীদের মেডিকেল টেস্ট হয়েছিল। সেখান থেকেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
সিআইডি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারও সৃজন রায়কে সঙ্গে নিয়ে উত্তর কলকাতার একটি বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সেখান থেকেও কিছু কাগজ-পত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শ্যালকের গ্রেফতারির পরেই মুকুল রায় কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন, যাতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ কিংবা গ্রেফতার করা না হয়। আদালত জানিয়েছে, ১৬ মে পর্যন্ত মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। বৃহস্পতিবার সিআইডির এক অফিসার জানান, ‘এখনও পর্যন্ত এই মামলায় যে কাগজ-পত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাতে রেল হাসপাতালের কেউ-কেউ জড়িত রয়েছেন বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। যেভাবে রেল হাসপাতালে এতজন অভিযোগকারীর মেডিকেল টেস্ট হয়েছে, তাতে হাসপাতালের কেউ যুক্ত না থাকলে তা হওয়া কঠিন। তবে যেহেতু এই মামলায় মূল অভিযুক্ত তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়, তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ না করলে কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব নয়।’ হাইকোর্টের দিকেই এখন তাকিয়ে সিআইডি। সেখান থেকে সবুজ সম্মতি মিললেই বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সিআইডি সূত্রের খবর