প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভারতের জনসংখ্যা। তুলনায় দেশের কৃষি জমির পরিমাণ সীমিত। ফলে সেই অনুপাতে বাড়ছে না দেশের খাদ্য উৎপাদন। এর উপর ক্ষতিকারক বিভিন্ন কীট-পতঙ্গের প্রকোপে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ফসল জমিতেই নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বেশিরভাগ সময়েই দেশের ফসল উৎপাদকরা চাষের জমিতে বিভিন্ন কীটনাশক ছড়ান। এর ফলে কীট-পতঙ্গের হাত থেকে সাময়িক নিস্তার হয়তো মেলে, কিন্তু ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহ্রত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় চাষের জমি। সেই সব ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশে মাটি এবং জলের সঙ্গে। যা শোষণ করে গাছ ও উৎপাদিত ফসল। ফলে সেই সব ফসলের মাধ্যমে ঘুর পথে মানব দেহেও প্রবেশ করে ক্ষতিকারক বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান। এছাড়াও চাষের জমিতে এমন কিছু পতঙ্গ থাকে যারা ক্ষতিকারক কীট-পতঙ্গ খেয়ে বা মেরে ফেলে ফসলের ক্ষতি হওয়া কমায়। কিন্তু বিষাক্ত রাসায়নিকের প্রভাবে এই ‘কৃষক বন্ধু’ পতঙ্গদের সংখ্যাও দিন দিন কমছে। বিষয়গুলি নতুন বা অজানা নয়। মানব শরীরে এই সব রাসায়নিকের কু-প্রভাব নিয়েও কম-বেশি সকলেই সচেতন। তাই বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিকের বদলে পরিবেশবান্ধব কীটনাশক বা অরগ্যানিক প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে সরকারও।
ইতিমধ্যেই দেশের বাজারে বেশ কিছু সংস্থা পরিবেশবান্ধব কীটনাশক এনেছে। যেগুলি ব্যবহারের খরচ প্রতি একর জমিতে প্রায় হাজার টাকার কাছাকাছি। বুধবার, পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের বাজার এবং মূলত ধান চাষের কথা মাথায় রেখে পরিবেশবান্ধব নয়া কীটনাশক আনল বাণিজ্যিক সংস্থা পি আই ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। জমিতে ধানের চারা রোপণের ২৫ দিন পর এটি ছড়াতে হবে মাটিতে। সংস্থার দাবি, ‘কসকো’ নামে তাদের এই নয়া দানাদার কীটনাশক ‘গ্রীন কেমিস্ট্রি’ যুক্ত। অর্থাৎ এটি একদিকে মাটিতে ছড়ালে সেটি মাটির এবং কৃষকবান্ধব পতঙ্গর কোনও ক্ষতি না করেই অপকারী কীট-পতঙ্গদের নষ্ট করবে। অন্যদিকে, পরিবেশবন্ধব উপাদান ব্যবহৃত হওয়ায় উৎপন্ন ফসলের মধ্যে সেগুলি প্রবেশ করলেও মানব শরীরে কোনও কু-প্রভাব ফেলবে না। সংস্থার দাবি, বাজার চলতি অন্যান্য কীটনাশকের তুলনায় এর দামও অনেকটা কম। প্রতি একর ধানের জমিতে এই কীটনাশক ব্যবহারের খরচ পড়বে ৭৮০ থেকে ৭৯০ টাকা। অর্থাৎ প্রায় ২০ শতাংশ সাশ্রয় হবে চাষিদের।