প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসের আক্রমণে কেরালায় প্রাণ হারালেন ১১ জন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও অনেকে। ফলে বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। মূলত উত্তর কেরালার বিভিন্ন অংশে থাবা বসিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। এই ভাইরাস আক্রমণের মূল কেন্দ্র কোঝিকোড় শহর। মৃতদের মধ্যে ৭ জনই কোঝিকোড়ের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন সদস্য রয়েছেন। মল্লপূরম থেকে ৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কোঝিকোড় থেকে ৪০ কিমি দূরে পেরাম্বা তালুক হাসপাতালে ভাইরাস আক্রান্ত এক রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক নার্সের। তবে ভারতে নিপাহ্’র আক্রমণ এই প্রথম নয়। একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কয়েকজন। তবে তখন কেউ মারা জাননি। এদিকে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা দিল্লি থেকে চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দলকে কেরালায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ন্যাশনাল সেন্টার অফ ডিজিস কন্ট্রোল (এনসিডিসি)এর ডিরেক্টরের নেতৃত্বে ডাক্তারদের এই বিশেষ দলটি ইতিমধ্যে কেরালায় পৌঁছে গিয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালে নিপাহ প্রথম থাবা বসায় মালয়েশিয়ায়। সে যাত্রায় সেখানে ১০০ জন মারা গিয়েছিলেন এই ভাইরাসের আক্রমণে। শুকরের থেকে ছড়িয়েছিল সেই ভাইরাস। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে থেকেও মিলেছিল এই ভাইরাসের আক্রমণের খবর। বাংলাদেশে বাদুরে খাওয়া ফল থেকে সরাসরি মানুষের দেহে প্রবেশ করেছিল নিপাহ। হু-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিরল ও প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের মোকাবিলায় এখনও কোনো ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি। মানুষ এবং পশু উভয়ের শরীরেই বাসা বাঁধতে পারে এই ভাইরাস। সরাসরি মানুষের থেকে অন্য মানুষের দেহে ছড়ায় নিপাহ। বাদুরের মাধ্যমেই প্রাথমিক ভাবে নিপাহ্ ছড়ায় বলে অনুমান বিজ্ঞানীদের। তীব্র শ্বাসকষ্ট, স্নায়ু বিকার, এনসেফ্যালাইটিসের মতো লক্ষণ দেখা যায় এই ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে। যা, মস্তিষ্কে আঘাত করে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।