‘আমরা দাদার অনুগামী’, রাজ্য রাজনীতিতে কিছুদিন ধরে জায়গা করে নিয়েছে এই শব্দবন্ধ। সৌজন্যে শুভেন্দু অধিকারী ও তৃণমূল নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। এমনকী সোমবার মেদিনীপুরের মাঠে যখন মুখ্যমন্ত্রী সভা করতে যাচ্ছেন, তাঁর হোর্ডিং, ফ্লেক্সের পাশাপাশি উপস্থিত ‘আমরা দাদার অনুগামী’ নামে পোস্টার। কিন্তু এর মধ্যেই হাওড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যাচ্ছে আর এক ধরনের পোস্টার। যেখানে রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জির ছবি দিয়ে লেখা ‘আমরা দাদার ভক্ত’। সেই সঙ্গে উপরে লেখা অন্যায় যেখানে, প্রতিবাদ সেখানে।
এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে আরও এক তৃণমূল মন্ত্রী কি শুভেন্দুর রাস্তা ধরছেন? প্রশ্ন উঠছে এই পোস্টার সাঁটা বা প্রচারের দায়িত্বে ঠিক কারা রয়েছেন? তাঁরা কি রাজীব ব্যানার্জির অনুমতিক্রমে এই পোস্টার দিচ্ছেন?
দু’দিন আগেই এক অরাজনৈতিক সভা থেকে নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন রাজীব। বলেছিলেন, দলের সব সিদ্ধান্তে হ্যাঁ বলতে পারেননি বলে তাঁর নম্বর বাড়েনি। শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়লে তা নিশ্চিতভাবে দলের ক্ষতি বলেও মন্তব্য করেছিলেন রাজীব। যদিও নিজে মন্ত্রিত্ব বা দল ছাড়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। কিন্তু রাজীব ব্যানার্জির এই মন্তব্যের পরদিনই বিভিন্ন জায়গায় তাঁর নামে পোস্টার দেখা যাচ্ছে। কোথাও লেখা আছে ‘সততার প্রতীক’, কোথাও লেখা, ‘অন্যায় যেখানে প্রতিবাদ সেখানে’। আর এই সমস্ত পোস্টারে দেখা যাচ্ছে প্রচারক হিসেবে লেখা ‘আমরা দাদার ভক্ত’।
শুভেন্দুর নামে ব্যানার, ফ্লেক্স লাগানো নিয়ে একবার তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠক থেকে রাজীব ব্যানার্জি বলেছিলেন, তিনি এসব সমর্থন করেন না। অরাজনৈতিক সভা অবশ্যই করা যায়, কিন্তু নিজস্ব পরিচয় দিয়ে পোস্টার লাগানোর তিনি ঘোরতর বিরোধী বলে জানিয়েছিলেন রাজীব। তবে শুভেন্দুর ‘অনুগামী’র পর এবার তাঁর ‘ভক্ত’ বলে যেসব পোস্টার পড়ছে তা নিয়ে বনমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। আবার তৃণমূলের একাংশ বলছে, এই ফ্লেক্স, ব্যানারগুলি লাগিয়েছে বিরোধীরা। এর আগে পাহাড়ে শুভেন্দুর অনুগামী হিসেবে পোস্টার দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার প্রচারক হিসেবে যাঁর নাম লেখা আছে, তাঁকে কেউ চেনেনই না। তাই তৃণমূলের মধ্যে ফাটল ধরাতে এই পোস্টার লাগানো হচ্ছে বলে দাবি করছেন ওই নেতৃত্বের একাংশ। যদিও এই প্রেক্ষিতে একটা প্রশ্ন উঠছেই। সেটা হল, এবার রাজীবও কি মন্ত্রিত্ব ছাড়তে পারেন?
Comments are closed.