কখনও সক্রিয়, কখনও নিষ্ক্রিয়! নিজেদের বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন; সিবিআই প্রসঙ্গে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি সহ দেশের একাধিক বিজেপি বিরোধী নেতানেত্রী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন। কয়েকদিন আগে মমতা ব্যানার্জি বিজেপি বিরোধী নেতানেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন, যাতে তিনি স্পষ্ট অভিযোগ করেন, বিরোধীদের কন্ঠরোধ করতে কেন্দ্র সিবিআই ইডির মতো তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে বার বার ব্যবহার করছে, যা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আর এবার দেশের প্রধান বিচারপতির কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল সিবিআই। শুক্রবার সিবিআই আয়োজিত এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা বলেন, সিবিআই সময়ে সময়ে তার সক্রিয়তা এবং নিষ্ক্রিয়তা ফলে নিজেদের কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এতদিন বিরোধীরা সিবিআই সম্পর্কে যে অভিযোগ তুলে এসেছেন, প্রধান বিচারপতির মুখেও কার্যত একই কথা শোনা যাওয়ায় রাজনৈতিক মহলেও তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এদিন সিবিআইয়ের প্রথম অধিকর্তা ডি পি কোহলি স্মারক বক্তৃতায় আমন্ত্রিত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি। ওই অনুষ্ঠানেই গণতন্ত্রে তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা ও দায়িত্ব শীর্ষক এক বক্তৃতায় সিবিআই সম্পর্কে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। প্রধান বিচারপতির কথায়, আগে সিবিআই সম্পর্কে মানুষের আস্থা ছিল। সিবিআই তদন্তের দাবিতে কোর্টে প্রচুর আবেদন জমা পড়ত। কিন্তু বর্তমানে সিবিআইয়ের ভূমিকাও প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। সিবিআই বর্তমানে একাধিক ক্ষেত্রে শাসক দ্বার নিয়ন্ত্রিত, নিজের বক্তব্যে পরোক্ষভাবে তাও যেন অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, সিবিআইয়ের উপরে সাধারণ মানুষের ভরসা ফেরাতে হলে, শাসক দ্বারা তাদের প্রভাবিত হওয়ায় বন্ধ করতে হবে।
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করলেও অন্যান্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও প্রধান বিচারপতির সমলাচনা থেকে রেহাই পায়নি। তিনি বলেন, সিবিআই, ইডি-র মতো সংস্থাগুলিকে একত্রিত করে অবিলম্বে একটি স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থাগড়া প্রয়োজন। আইন প্রণয়ন করে এই সংস্থাকে সুরক্ষিত করতে হবে। আইনেও সংস্থাকে ক্ষমতা ও অধিকার দেওয়া থাকবে। সিবিআইকে প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শাসক বদলে যাবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে যাবে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আপস করবেন না, স্বাধীন হন। নিয়ম মেনে চলুন।
Comments are closed.