গত ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জারি করা এনপিআর নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্যের ২০ জন শিক্ষক মামলা করেছিলেন। পিটিশনে তাঁরা জানিয়েছিলেন, নাগরিকত্ব আইন, ২০০৩ অনুযায়ী লোকাল রেজিস্ট্রারকেই এনপিআরে ‘সন্দেহজনক নাগরিক’ চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। ইজরারুল হক মণ্ডল সহ ১৯ জন শিক্ষক তাঁদের পিটিশনে দাবি করেন, এই পদ্ধতির ফলে পক্ষপাতিত্ব হতে পারে। ‘সন্দেহজক নাগরিক’ বাছার কাজে ফাঁকফোকর থাকার বিস্তর আশঙ্কা রয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৯ এবং ১০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সন্দেহজনক নাগরিকদের বের করার পন্থা আছে। তারপরেও একজন আঞ্চলিক অফিসারকে এই নাগরিক বাছার দায়িত্ব দেওয়া বিধিবহির্ভূত এবং অযৌক্তিক।
এই প্রসঙ্গে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, আগামী ২২ জানুয়ারি সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রকেও এই বিষয়ে নোটিস পাঠানোর কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
মামলায় শিক্ষক ইজরারুল হক মণ্ডলদের অভিযোগ, সঠিক নাগরিক বাছার এই কর্মকাণ্ডে সবচেয়ে বড় সমস্যার মুখোমুখি হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মুসলিমদের বেশিরভাগ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ও শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে যে কাগজপত্র দাবি করা হয়েছে, তা কতজন দিতে পারবেন সে সন্দেহ থেকেই যায়। হলফনামায় শিক্ষকেরা লিখেছেন, দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের নিজস্ব সম্পত্তি নেই। এই ভূমিহীন মানুষেরা নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে প্রবল সমস্যার মুখোমুখি হবেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ জুলাই এনপিআর নিয়ে নোটিস জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাতে ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এনপিআরের কাজ শেষ করার কথা বলা হয়। বাংলার ২০ জন শিক্ষক এই কেন্দ্রীয় নোটিস প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। পাশাপাশি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতাও করা হয়েছে এই পিটিশনে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের এনপিআর নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে এই সপ্তাহের প্রথমার্ধে আরও একটি পিটিশন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে বলা হয়, যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা মতো, দেশজুড়ে এনআরসি নাই হবে তাহলে, এনপিআরের প্রয়োজন কী? পিটিশনকারীদের অভিযোগ, এনআরসি চালু করার প্রথম প্রক্রিয়া হল এনপিআর।
Comments are closed.