নন্দীগ্রাম জিততে শেষ ভরসা পাকিস্তান! শাহের কথার পুনরাবৃত্তি শুভেন্দুর গলায়
জমি আন্দোলনের আঁতুড় ঘর নন্দীগ্রামে ছোট ছোট পাকিস্তান তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু
২০১৫ তে বিহারে বিধানসভা ভোটের সময়, বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন বিহারে মহাজোট সরকার গড়লে পাকিস্থানে বাজি ফাটবে। অমিত শাহের বক্তব্য স্পষ্ট, লালুপ্রসাদ, নীতিশ কুমার ও কংগ্রেসের মহাজোট জিতলে পাকিস্তানে উৎসব হবে!
অমিত শাহের সেই মন্তব্যের নিন্দা হয়েছিল দেশজুড়ে। তারপর অবশ্য লালুর হাত ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে বিহারে সরকার গড়ে নীতিশ কুমারের জেডিইউ। তারপর কেটে গিয়েছে ৬ বছর। এবার বাংলার ভোটে ভোটে ঢুকে পড়ল পাকিস্তান। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, এবার পাকিস্তান জুজু উঠে এলো গত ১৯ ডিসেম্বর অমিত শাহকে নিজের ‘দাদা’ বলে অভিহিত করা শুভেন্দু অধিকারীর মুখে!
সোমবার নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এখানে তৃণমূল জিতলে পাকিস্তানে বোমা ফাটিয়ে তা উদযাপন করা হবে। জমি আন্দোলনের আঁতুড় ঘর নন্দীগ্রামে ছোট ছোট পাকিস্তান তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু। এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু সরাসরি বলেন, আপনারা কি চান সুফিয়ান আনন্দ পাক? যদি তা না চান বিজেপিকে ভোট দেবেন।
আর ঠিক ৯ দিন পরে নন্দীগ্রামে ভোট। একুশের নির্বাচনের মূল আকর্ষণীয় কেন্দ্র। তৃণমূল বিজেপি দু’পক্ষই একচুল জমি ছাড়তে রাজি নয়।
[আরও পড়ুন- তুমি On Camera ঘুষ খেয়েছ, আখের গোছাতে দল বদলে BJP! শুভেন্দুকে তুলোধোনা মীনাক্ষীর]
মেদিনীপুরে প্রতিটা সভা থেকে শুভেন্দু সহ গোটা অধিকারী পরিবারকে মীরজাফর, গদ্দার, বিশ্বাসঘাতকের দল বলে তোপ দাগছেন তৃণমূল নেত্রী। শুভেন্দুও গেরুয়া শিবিরে একেবারে শুরুর দিন থেকে মেরুকরণের তাস খেলছেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা তাঁর জীবনের সবথেকে কঠিন লড়াই জিততে নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তুলে সুর সপ্তমে চড়িয়েছেন। মমতা নন্দীগ্রামে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পরেই শুভেন্দু প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন, উনি তো ভোটে দাঁড়িয়েছেন বাষট্টি হাজারের ভরসায়! তাঁর সরাসরি কটাক্ষ ছিল, সংখ্যালঘু ভোটই তৃণমূলের মূল ভরসা। এদিনও ফের একবার সেই অস্ত্র ঝুলি থেকে বের করলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী।
আর এই বক্তব্যই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, নন্দীগ্রামের ঘরের ছেলে বলে নিজেকে দাবি করা শুভেন্দু অধিকারীকে পাকিস্তান বা সাম্প্রদায়িকতাকে আনতে হচ্ছে কেন?
Comments are closed.