TMC: মমতার চেয়ে তিনগুণ BJP বিরোধী হতেন রবীন্দ্রনাথ, তাঁকেও গালাগাল করত বিজেপি আইটি সেল

একুশের বিধানসভা ভোটে পাখির চোখ বিজেপির। বাংলার দল হিসেবে বিজেপিকে প্রতিষ্ঠা করার মরিয়া চেষ্টায় রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দের মতো মনীষীদের প্রশস্তি উঠে আসছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখে। অন্যদিকে রাজ্যের শাসক দল তাদের বহিরাগত বলেই ক্রমান্বয়ে প্রচার চালাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতীর শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের তীব্র সমালোচনা করল তৃণমূল। তাদের তোপ, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বারবার রবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন। তথ্যের বিকৃতি করেছেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গুজরাতের সম্পর্ক তুলে ধরতেই তিনি বেশি সচেষ্ট ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, খোঁচা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। তাঁদের দাবি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়েও প্রাদেশিকতার রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রাত্য বসু ও রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সেখান থেকে ব্রাত্য বলেন, বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী যে ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, সেখানে ভরপুর ছিল ভুল তথ্য। রবীন্দ্রনাথের মেজদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বড়দা বলে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর স্ত্রীয়ের নামের ভুল উচ্চারণ করেছেন। এছাড়া রবীন্দ্রনাথের গান উদ্ধৃত করতে গিয়ে বিকৃতি করা হয়েছে। ব্রাত্য বসুর খোঁচা, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গুজরাতের সম্পর্ক বার করতে প্রধানমন্ত্রী এত উৎসাহী কেন তা বোঝা গেল না। বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য মতো, জ্ঞানদানন্দিনী দেবী গুজরাতি রমণীদের কাছ থেকে শাড়ি পরার কৌশল শিখেছিলেন এ কথা ঠিকই। কিন্তু তা অর্ধ সত্য। তিনি যে পার্সি রমণীদের কাছ থেকেও বিশেষভাবে শাড়ি পরা শিখেছিলেন তা সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রাত্যর আরও দাবি, এভাবে বারবার পশ্চিমবঙ্গকে ছোট করছেন নরেন্দ্র মোদীরা। বাংলার গৌরবময় ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ছোট করা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের রেশ ধরে তাঁর কটাক্ষ, রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে মমতার চেয়ে তিনগুণ বিজেপি বিরোধিতা করতেন। প্রাদেশিকতা ও সংকীর্ণ রাজনীতির তীব্র বিরোধী রবীন্দ্রনাথকে সেকুলার, নাস্তিক বলে দাগাত বিজেপি। বিজেপির আইটি সেল তাঁকে গালাগাল করত, বাঁচতে দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করত। রবীন্দ্রনাথের লেখা একাধিক উদ্ধৃতি দিয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতা। ব্রাত্যর কথায়, বিজেপি ক্ষুদিরাম, ইন্দুভূষণ রায়দের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে ভোটের রাজনীতি করছেন। আদতে বাঙালির পূর্বপুরুষদেরই ছোট করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর শতবর্ষ অনুষ্ঠান শুরুর আগে সকালেই এই উপলক্ষ্যে একটি ট্যুইট করেন মমতা। তাতে রবীন্দ্রনাথের একটি গানের লাইন লিখে কবিগুরুর চিন্তা ও দর্শনের সংরক্ষণের বার্তা দেন মমতা।

Comments are closed.