রেল ক্ষেত্রেও বঞ্চনা, মমতার ‘ভিশন ২০২০’ বন্ধ, তথ্য তুলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল

মোদীর রাজ্য গুজরাতে বুলেট ট্রেন চালাতে প্রতি কিলোমিটার খরচ হচ্ছে ১৮০ কোটি টাকা। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সবজি বহনের ট্রেনে কেন্দ্র বরাদ্দ করছে মাত্র ২৩ কোটি টাকা! ২০২০- ২১ আর্থিক বর্ষে বাংলার বিভিন্ন রেলওয়ে প্রোজেক্টের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ এক হাজার টাকার বন্ধনীতে। এমনই সব অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করল রাজ্যের শাসক দল।

সোমবার রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সাংবাদিক বৈঠক করে রেল ক্ষেত্রের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন। তাঁর অভিযোগ, রেল ক্ষেত্রেও সারা দেশ এবং বিশেষ করে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করেছে মোদী সরকার। হাওড়া থেকে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাজেটে ইচ্ছাকৃতভাবে মমতার ভিশন ২০২০-কে বন্ধ করে দিয়েছে। মমতার সরকারের দশটি উদ্যোগকে পুরোপুরি ছাঁটাই করেছে কেন্দ্র, দাবি তৃণমূলের।

শশী পাঁজা বলেন, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত রেলের যাবতীয় প্রকল্প ও তার খরচ বহন করত কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ঘোষণা করা হয় রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে ৫০ ভাগ দেবে কেন্দ্র এবং ৫০ শতাংশ দেবে রাজ্য। আলোচনা না করে জোর করে রাজ্যগুলির উপর সমস্ত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। একে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় ধাক্কা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শশী পাঁজা যোগ করেন, ২০১৭ সালের পর রেলের পৃথক বাজেট না করার ‘নির্লিপ্ত উদ্দেশ্য’ ছিল। রেলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপার এভাবেই তলানিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, রেলের পৃথক বাজেট থাকলে অ্যালোকেন্স, ডিভিডেন্ট সম্পর্কে স্বচ্ছ তথ্য পাওয়া যেত। কিন্তু এখন কেন্দ্রীয় বাজেটের মধ্যেই রেল বাজেটকে অন্তর্ভুক্তি করার ফলে সেই স্বচ্ছতা পাওয়া যাচ্ছে না। তৃণমূল নেত্রীর আরও অভিযোগ, যে রেলের উপর দেশের সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে নির্ভর করেন ইচ্ছাকৃতভাবে সেই রেলের দক্ষতা, মান, প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্রীয় সরকার তলানিতে নিয়ে গিয়েছে। বুলেট ট্রেন চালাতে প্রতি কিমিতে খরচ হচ্ছে ১৮০ কোটি টাকা। অথচ আলু- সবজি নিয়ে চলা ফ্রেড করিডর ট্রেন যাত্রায় প্রতি কিমিতে বরাদ্দ হচ্ছে ২৩ কোটি টাকা। শশী পাঁজার কথায়, আমরা বুলেট ট্রেনের বিরুদ্ধে নয়। আধুনিকতার বিপক্ষে নয়। প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধেও বলছি না। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন জিনিসকে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে। কলকাতা মেট্রো ইস – ওয়েস্ট প্রকল্পের কাজে ঢিলেমি করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Comments are closed.