কয়েক মাস পরেই বিধানসভা ভোট। তার আগে গত ১০ বছরে রাজ্যে কী কী উন্নয়ন হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরে রিপোর্ট প্রকাশ করল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখার্জি, শোভনদেব চ্যাটার্জি ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ছিলেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ ব্যানার্জি। তাঁদের দাবি, কাজের প্রতিশ্রুতি নয়, কী কী কাজ হয়েছে তার তুল্যমূল্য বিচার করে মানুষ ফের তৃণমূলের হাতেই রাজ্য পরিচালনার ভার তুলে দেবেন।
রিপোর্ট কার্ডে দাবি, এক দশকের মধ্যে বাংলার মানুষের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। শিল্প ও অনুসারি শিল্পক্ষেত্রে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলায় কৃষি ও অনুসারী শিল্পে ৫ গুণ বাজেট বৃদ্ধি হয়েছে।
রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরে মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি জানান শিক্ষাক্ষেত্রে ঐতিহাসিক কাজ হয়েছে। যা এই চার পাতার রিপোর্ট কার্ডে তুলে ধরা মুশকিল। কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, মিড-ডে মিল, পড়ুয়াদের পোষাক বিলির উদ্যোগে কত পড়ুয়া উপকৃত হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেন।
রিপোর্ট কার্ডে প্রকাশ, গত ১০ বছরে রাজ্যে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫০টি কলেজ-সহ একাধিক নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে।
রাজ্য সরকারে উল্লেখ্যযোগ্য উন্নয়নের মধ্যে আছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। বলা হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আমজনতার চিকিৎসায় উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে হাসপাতাল, বৃদ্ধি পেয়েছে বেড সংখ্যা। স্বাস্থ্যখাতে বাজেটেও ৩ গুন বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে, রিপোর্ট কার্ড তুলে দাবি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর।
রিপোর্ট কার্ডে বিশেষ জায়গা দেওয়া হয়েছে খাদ্যসাথী প্রকল্পকে। বাংলা আবাস যোজনায় প্রায় ৩৪ লক্ষ মানুষ নিজেদের বাড়ি পেয়েছেন। নির্মল বাংলা প্রকল্পে তৈরি হয়েছে শৌচাগার। বাংলার রাস্তাঘাটের অভূতপূর্ব উন্নতি রয়েছে। বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুৎ ও পানীয় জল। উল্লেখ করা হয়েছে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের কথা। যার মাধ্যমে বাংলার প্রায় ৪৭ লক্ষ কৃষিজীবী মানুষ আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন।
মহিলাদের ক্ষমতায়নে রাজ্য সরকারের বিশেষ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্ট কার্ডে। বলা হয়েছে, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে যেমন মহিলারা সুবিধা পেয়েছেন, তেমনই পঞ্চায়েত-সহ একাধিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর পদক্ষেপ করেছে সরকার। ৯০ লক্ষ গ্রামীণ মহিলাকে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ গড়ে দিয়েছে এই সরকার। তফশিলি জাতি ও উপজাতির উন্নয়নে একাধিক নতুন প্রকল্প আনা হয়েছে। প্রবীণদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সুদীপ ব্যানার্জির কথায়, কর্মসংস্থানের দিকেও বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলা। রিপোর্ট কার্ডে বলা হয়েছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন ১ কোটি ৬৩ লক্ষ মানুষ। ২০১০ সালের তুলনায় কারখানা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে কাজ পেয়েছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ। এছাড়া রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কথাও।
তৃণমূল সরকারের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে বিধায়করা শুক্রবার থেকে বিধানসভা কেন্দ্রে মিছিল করবেন।
Comments are closed.