আসানসোলে পুরনো নেতাদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি সিপিএমের

গত লোকসভা ভোটে আসানসোলে বিজেপির জয়ে যতটা না ধাক্কা খেয়েছে রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, তার থেকেও অনেক বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সিপিএম। আসানসোল, কুলটি, জামুরিয়া, রানীগঞ্জে দ্রুত শক্তিবৃদ্ধি করেছে বিজেপি। এবছর রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে আসানসোলে যে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তাতে মেরুকরণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা এবং সিপিএম কাউন্সিলার ওয়াশিমূল হক তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়েছেন। সব মিলে আসানসোল এলাকায় রীতিমতো চাপে থাকা সিপিএম এলাকায় জনসংযোগ বাড়াতে নিয়েছে এক বিশেষ কৌশল। বহুদিনের পুরনো সিপিএম নেতা-কর্মী, যাঁরা বিভিন্ন কারণে রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

পুরনো নেতা গোপাল রায়ের সঙ্গে পার্থ মুখোপাধ্যায়

সূত্রের খবর, মার্চ মাসে রামনবমীর সময় আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয়েছে তার পর থেকেই আরও বেশি করে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। আসানসোলের সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় নিজে নিয়ম করে পুরনো দিনের বয়স্ক নেতা, কর্মীদের বাড়ি যাচ্ছেন। যাঁরা আগে প্রত্যক্ষভাবে দল করতেন, কিন্তু নানা কারণে বসে গিয়েছেন, কিংবা দলের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত থাকলেও, তাঁর পরিবারের লোকজন অন্য দলে যোগ দিয়েছেন, মূলত তাঁদের বাড়িতেই যাচ্ছেন সিপিএম নেতারা। কথা বলছেন তাঁদের সঙ্গে। তাঁরা যেন আবার সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত হন সে কথাও বোঝাচ্ছেন।
কিন্তু পুরনো নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ অভিযান শুরু করলেও আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা যেভাবে সরাসরি ফেসবুকে পোস্ট করে সিপিএমের সমালোচনা এবং তৃণমূলের প্রশংসা করছেন তা নিয়েও দলের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সিপিএম কাউন্সিলার ওয়াশিমূল হক কয়েকদিন আগেই পুরসভার বিরোধী দলনেতার পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়ে শাসক দলকে চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু তারপর এখনও তিনি সিপিএমের সদস্যও রয়েছেন। কেন তাঁর বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে পার্টি নেতাদের একাংশের। এ ব্যাপারে পার্থ মুখোপাধ্যায় জানান, দল পুরো ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সময় মতো ঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরনো নেতাদের বাড়ি যাওয়া প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিজেপি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিষ ঢালছে, তার মোকাবিলার জন্যই মানুষের বাড়ি যাওয়ার কর্মসূচি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.