এবার হিন্দির বিরোধিতায় ডিএমকে, তামিল ভাষাই দেশের একতা তৈরি করতে পারে, মত স্ট্যালিনের দলের

হিন্দির চেয়ে তামিল ভাষাই দেশের মানুষের মধ্যে বেশি একতা তৈরি করতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হিন্দিকে দেশের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে পাল্টা দাবি ডিএমকের। অর্থনীতি, প্রযুক্তি বা সামাজিক ক্ষেত্রে হিন্দিভাষী অঞ্চলগুলির থেকে দক্ষিণ ভারতের অহিন্দিভাষী অঞ্চল অনেক এগিয়ে। তাই তামিলনাড়ুর দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে) দলের দাবি, দেশের একতা তৈরি এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিতির জন্য হিন্দির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর তামিল ভাষা।
গত ১৪ ই সেপ্টেম্বর হিন্দি দিবস উপলক্ষ্যে অমিত শাহের ট্যুইট ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। ট্যুইটারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ভারতের বিশ্বব্যাপী পরিচিতির জন্যে একটি অভিন্ন ভাষার প্রয়োজন, আর সেটি হতে পারে একমাত্র হিন্দি। তাই হিন্দি ভাষাকেই রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি বিরোধী দলগুলি তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে। যদিও অমিত শাহ পরে বলেছেন, জোর করে কোথাও হিন্দি চাপানো হবে না। তবুও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খোঁচা দিলেন ডিএমকে দলের মুখপাত্র ও সাংসদ টিকেএস এলানগোভান।
স্ট্যালিনের দলের মুখপাত্রের কথায়, ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের পরিচয়কেই তাঁরা পূর্ণ সমর্থন করেন। কিন্তু কেবলমাত্র একটি ভাষাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতির জন্য বেছে নিতে চাইলে তা হবে তামিল ভাষা। এলানভোগান বলেন, বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষাগুলির মধ্যে একটি হল তামিল। ভারত, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুরের সরকারি ভাষা তো বটেই দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে তামিল ভাষী মানুষের সংখ্যা বিশাল।
দেশের প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব গুরুত্বের কথা স্বীকার করেও হিন্দিকে দেশের জাতীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর স্ট্যালিনের দলের মত, দেশের হিন্দিভাষী মানুষের সংখ্যা যেমন বেশি তেমন অহিন্দিভাষীর সংখ্যাও তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়া সাহিত্য, অর্থনীতি, প্রযুক্তি বা সামাজিক ক্ষেত্রে হিন্দিভাষী অঞ্চলগুলির থেকে দক্ষিণ ভারতের অহিন্দিভাষী অঞ্চল অনেক এগিয়ে বলে মন্তব্য করেন ডিএমকের মুখপাত্র।
অমিত শাহের হিন্দিকে রাষ্ট্র ভাষা করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে দক্ষিণের অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ কমল হাসান থেকে রজনীকান্ত মন্তব্য করেছেন। রজনীকান্ত বলেছেন, দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের উপর হিন্দি চাপানো যাবে না। আর কমল হাসানের হুঁশিয়ারি ছিল, কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাটের মর্জিমাফিক এ দেশ চলবে না। ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যে কোপ পড়লে ফের শুরু হবে ভাষা আন্দোলন।

Comments are closed.