দিল্লির সংঘর্ষে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ২০। রবিবার থেকে সিএএ বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মূলত উত্তর দিল্লিতে চলা এই সংঘর্ষে আহতের সংখ্যা দেড়শো ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত তিনদিন ধরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠা এলাকাগুলিতে এদিনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে। উপদ্রুত এলাকাগুলি থমথমে, জনমানবশূন্য, যানবাহনের দেখা নেই, স্কুল-কলেজ-অফিস সব বন্ধ, চলছে আধা সেনার টহলদারি। মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল দিল্লির সিলামপুর, জাফরবাদ, মৌজপুর এবং গোকুলপুরী চক ঘুরে বেড়িয়েছেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকও হয়েছে। দিল্লিকে শান্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি অবিলম্বে সেনা নামানোর দাবি করেছেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, সেনা নামানোর প্রয়োজন নেই।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বুধবার সকালে বলেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। একটি ট্যুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, সমস্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ করতে পারেনি পুলিশ। এই অবস্থায় সেনা নামানো এবং দিল্লির সবকটি সংঘর্ষ প্রভাবিত এলাকায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্ফু জারি করা দরকার। এ নিয়ে অমিত শাহকে চিঠি দিচ্ছেন বলেও জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লির হিংসা রোখার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার রাতে কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান জেএনইউ ও জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ জলকামান ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। এদিন দুপুরে জাফরবাদে কার্ফু জারি করা হয়।
অজিত ডোভাল এদিন জানিয়েছেন, ভয়ের কোনও কারণ নেই। ইতিমধ্যে যথেষ্ট বাহিনী নামানো হয়েছে। তিনি বলেন, আইন মেনে চলা কোনও নাগরিকের গায়ে আঁচড় পড়বে না। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ নিয়ে আমজনতার মধ্যে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে তাও স্বীকার করে নিয়েছেন দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, দিল্লি পুলিশের শক্তি-সামর্থ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন মানুষ। এই সমস্যা দূর করা দরকার। পুলিশের উপর আস্থা থাকা দরকার মানুষের। তিনি আরও বলেন, যারা হিংসা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাহিনীকে। প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ানো কোনও ভাবে বরদাস্ত করা যায় না।
দিল্লি হিংসা রুখতে মঙ্গলবার সন্ধের সময় পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবারই দিল্লির স্পেশাল পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে নিয়ে আসা হয় আইপিএস অফিসার এস এন শ্রীবাস্তবকে।