দুই দফায় তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জির। সেই আলোচনায় ‘বিক্ষুব্ধ’ রাজীবকে নিয়ে কোনও রফাসূত্র বেরিয়েছে কিনা তা এখনও অজানা। এর মধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে গরহাজির নিয়ে ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জির অবস্থান নিয়ে জল্পনা অব্যাহত।
মঙ্গলবারের রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মোট চার মন্ত্রী। রাজীব ব্যানার্জি, চন্দ্রনাথ সিংহ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং গৌতম দেব। এর মধ্যে রাজীবের অনুপস্থিতি নিয়েই সবচেয়ে বেশি কৌতূহল রাজনৈতিক মহলে। রাজ্য জুড়ে যখন দলবদলের আবহ, তখন মঙ্গলবারের ক্যাবিনেট বৈঠকে ‘বেসুরো’ রাজীব ব্যানার্জির অনুপস্থিতির কারণ কী? তাহলে দলের সঙ্গে বৈঠকের পরেও কি জট কাটেনি? উঠছে প্রশ্ন।
তাঁর গরহাজির প্রসঙ্গে অবশ্য রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি বলছেন, যে মন্ত্রীরা অনুপস্থিত ছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য গত কয়েকটি ক্যাবিনেট বৈঠকে থাকেননি মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও গৌতম দেব। আর চন্দ্রনাথ সিংহের এলাকায় অনুষ্ঠান থাকায় তিনি আসতে পারেননি।
রাজীব ব্যানার্জিও মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছেন যে, তাঁর ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে তাই তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না ক্যাবিনেট বৈঠকে, জানান পার্থ।
কিন্তু কিছুদিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে বেসুরো শোনাচ্ছে রাজীব ব্যানার্জিকে। সদ্য তৃণমূলত্যাগী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মতো রাজীব- অনুগামীদের পোস্টার দেখা গিয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। অরাজনৈতিক সভা থেকে দলকে নিয়ে একাধিকবার মন্তব্য শোনা করতে গিয়েছে রাজীবকে। তাঁর ক্ষোভ প্রশমন করতে গিয়ে আবার দু’বার বৈঠক সেরে ফেলেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে সেই বৈঠক নিয়ে রাজীব প্রকাশ্যে কিচ্ছু জানাননি। তিনি শুধু বলেন, দলের ডাকে সাড়া দিয়ে একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন শুধু। এই প্রেক্ষিতে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও রাজীবের অনুপস্থিতি অন্য মাত্রা যোগ করেছে। তাছাড়াও রাজীব প্রসঙ্গে বাড়তি জল্পনা যোগ করেছে আগামী জানুয়ারি মাসে অমিত শাহের কর্মসূচি। গত শনিবার মেদিনীপুর সভায় শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু সহ তৃণমূলের একঝাঁক বিধায়ক ও সাংসদ। এর মধ্যে আগামী ১২ জানুয়ারি ফের রাজীবের গড় হাওড়াতে সভা করার কথা অমিত শাহের। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যের বনমন্ত্রীর রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে ক্রমশ ঘণীভূত হচ্ছে জল্পনা। যদিও রাজীব বা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কেউই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি এই বিষয়ে।
Comments are closed.