সেই ১৯৭৪ সালের উ নু-র সামরিক সরকার রোহিঙ্গাদের সবরকম নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে এদের একেবারে রাষ্ট্রহীন করার মধ্যে দিয়ে যে নিপীড়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল , তা এখন শুধু চালু নয় , বরং তার মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে
। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গোটা পৃথিবীর আশা ছিল শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার প্রাপক বর্তমানে সরকারের কাযকারী প্রধান আং সুকি-র ওপর । কিন্তু তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া ২০১৬ সালের ববরতার কথা পুরোপুরি অস্বীকার
করেন ও এই প্রসঙ্গে ‘পৃথিবীর সব দেশেই মানবাধীকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে’ বলে গনহত্যার ঘটনাকে হালকা করার চেষ্টা করায় গোটা পৃথিবীই হতাশ হয়েছে । আজ থেকে প্রায় পাঁচ-ছশ’ বছর আগে বাা তার আগে থেকেই স্বাধীন আরাকানে মুসলিম- বৌদ্ধ শান্তিপ্রিয় সহাবস্থানের বা বন্ধুত্বের যে ঐতিহ্য চালু হয়েছিল তা হঠাৎ করে এতটা বিপযস্ত হল কেন? শুধুই কি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ইংরেজ বা জাপানের জন্য? এই দুই দেশ রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধদের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে এদের একজন কে
আরেকজনের বিরুদ্ধে লড়িয়ে নিজেদের স্বার্থস্বিদ্ধির যে চেষটা করেছিল তাই কি এদের পারস্পারিক অসহিষ্ণুতা বা শত্রুতার একমাত্র কারন?
কিন্তু রোহিঙ্গারা এবার যাবে কোথায়? মায়ান্মার সরকার ওদের হাতে ফরেন রেজিষ্ট্রেশন সাটিফিকেট ধরিয়ে দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে ওরা বহিরাগত, ওদের প্রতি মায়ান্মার সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশ , থাইল্যানড
, ইন্দোনেশিয়া , মালইয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি মায়ান্মার সরকারের আচরনের তুমুল বিরুদ্ধতা করেও জানিয়ে দিয়েছে, ওরা কোনোভাবেই রোহিঙ্গাদের আশ্রহ্রীদিতে পারবেনা, মায়ান্মার সরকারকেই ওদের নিজের দেশের নাগরিকদের মযাদা দান করতে হবে। এই দেশ গুলি বাইরে চলে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বা কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনবাসন বা ক্ষতিপুরনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে বৌদ্ধ ধ্মগুরু দলাই লামা মায়ান্মারের বৌদ্ধদের কাছে এক বাতা পাঠিয়েছেন। এই বাতায় তিনি বলেছেন , কিছু বৌদ্ধ সন্ন্যাসী , মুসলিম ভাইদের ওপর নেতিবাচক আচরন করেছে, তাদের উচিত বুদ্ধদেবের মুখ স্মরন করা । তিনি
আরও বলেছেন , ‘ বুদ্ধদেব জীবিত থাকলে তিনি নিশ্চই মুসলিম ভাইবোনদের রক্ষা করতেন’। বৌদ্ধ ধ্মগুরু দলাইলামা মায়ান্মারের কাযত প্রধান আং সাং সুকির কাছে আবেদন করেছেন , ‘আপনাকে এই বৌদ্ধ-মুসলিমদের মধ্যে চলতে থাকা আবিশ্বাস ও অসহিষঞুতার বাতাবরনের অবসান কাটাবার দ্বায়িত্ব নিতে হবে’। তার কথায়, আপনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়া নেত্রী , আর তাই গোটা পৃথিবী মনে করে মুসলিম ও বৌদ্ধ ভাই বোন দের মধ্যে জারি থাকা দীঘকালীন এই উত্তেজনা প্রশমন করা আপনার নৈতিক দায়িত্ব। আর দলাই লামা ও আং সাং সুকি এই দুজনের দিকেই এখন রোহিঙ্গারা তাকিয়ে। এই দুজনের প্রচেষটাই একমাত্র রোহিঙ্গাদের জীবনে শান্তি নিয়ে আস্তে পারে।
– রেহেনা গাজী।
গাংচিল পত্রিকা। ।
শরনাথী সংখ্যা।
(প্রকাশকের অনুমতিক্রমে)