তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ ৭ সাংসদ, কেন বাদ গেলেন সুব্রত বক্সি, সুগত বসু, সন্ধ্যা রায় সহ বাকিরা? চমক মিমি, নুসরত
দলের ৩৪ আসনের মধ্যে ৭ সাংসদকে এবার প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁরা হলেন সুব্রত বক্সি, সুগত বসু, সন্ধ্যা রায়, উমা সোরেন, ইদ্রিশ আলি, তাপস পাল এবং পার্থপ্রতিম রায়। কেন্দ্র বদল করেছেন মুনমুন সেনের। মঙ্গলবার বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ৪২ টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তার মধ্যে অন্যতম চমক সুব্রত বক্সির প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ যাওয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দলের সভাপতি সুব্রত বক্সি ভোটে লড়তে না চেয়ে গোটা রাজ্যে কাজ করতে চেয়েছেন। তাই তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থী হতে চাননি যাদবপুরের সাংসদ সুগত বসুও। তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি পাননি বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বকে।
এই দু’জনকে বাদ দিয়ে নাকি যে পাঁচ সাংসদকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার টিকিট দেননি, তাঁদের একেবারেই রাজনৈতিক কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এর বাইরে স্বাভাবিকভাবেই প্রার্থী তালিকায় জায়গা পাননি দুই সাসপেন্ডেড সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং অনুপম হাজরা। সৌমিত্র খাঁ ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিজেপিতে যোগ দিলেন অনুপম হাজরা। তাঁদের ধরে জেতা ৯ সাংসদ বাদ পড়লেন তৃণমূলের তালিকা থেকে।
পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলা এবং বাঁকুড়ার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি যথেষ্টই চিন্তায় ফেলেছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। এই আদিবাসী এলাকায় সব আসনে প্রার্থী বদলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যা রায় নিজেই লড়তে চাননি বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেও, সূত্রের খবর, মেদিনীপুরে সন্ধ্যা রায়কে সামনে রেখে বিজেপির মোকাবিলা কঠিন বুঝেই এই আসনে পোড় খাওয়া রাজনীতিক মানস ভুইঞাঁকে আনলেন তিনি। দীর্ঘ দিনের বিধায়ক মানস ভুইঞাঁ মেদিনীপুরকে হাতের তালুর মতো চেনেন। তাই রাজ্যসভার সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে লোকসভায় প্রার্থী করা হল সন্ধ্যা রায়কে সরিয়ে। দীর্ঘ দিন ধরেই ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সোরেনের কাজে অসন্তুষ্ট ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর এলাকায় বিজেপি ব্যাপক শক্তিবৃদ্ধি করেছে সম্প্রতি। তাঁকে সরানো হবে বলে একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। বাঁকুড়া কেন্দ্রেও মুনমুন সেনকে সরিয়ে আর এক পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতাকে বিজেপির বিরুদ্ধে নামালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ সালে সুব্রত মুখোপাধ্যায় কংগ্রেসের টিকিটে বাঁকুড়ায় লড়েছিলেন। যদিও মুনমুন সেনকে বাদ দেওয়া হয়নি। তিনি লড়বেন আসানসোলে।
২০১৭ সালে বসিরহাটে টানা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে ইদ্রিশ আলির ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল দল। একেই তার আগে বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জিতেছিলেন বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য। তার মধ্যে ২০১৭ সালের এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা নিয়েও উদ্বিগ্ন ছিল দল। ইদ্রিশ আলিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এই কেন্দ্র থেকে। এর পাশাপাশি কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাপস পাল চিট ফান্ড মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁকেও আর টিকিট দেওয়া হবে না বলেই ঠিক করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রার্থী তালিকা থেকে।
এর পাশাপাশি এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় সবচেয়ে বড় চমক যাদবপুরে মিমি চক্রবর্তী, বসিরহাটে নুসরত জাহান, দক্ষিণ কলকাতায় মালা রায়।
Comments are closed.