‘ভালোবাসার আচার’ বেচে ৬৫ হাজার অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৮৮’র ‘তরুণী’; দেশবাসীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন দিল্লির ঊষা গুপ্তা
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। নিজে সুস্থ হয়ে ফিরলেও হারিয়েছেন স্বামীকে। একসাথে ৬৩ বছর পথ চলার পর স্বামী রাজ কুমারকে হারিয়ে গভীর অবসাদ গ্রাস করে তাঁকে। জীবনের বাকি সময়টা কীভাবে কাটাবেন তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না ৮৮-এর ঊষা গুপ্তা। একাকিত্ব থেকে বাঁচতেই সিদ্ধান্ত নেন কোভিড আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু কীভাবে? নাতনি রাধিকা বাত্রার পরামর্শে আচার এবং চাটনির ব্যবসা শুরু করেন। বয়েসকে পাত্তা না দিয়ে নিজেই আচার তৈরি করে বিক্রি করতে শুরু করেন। আর নিজের এই উদ্যোগের নাম দেন, ‘Pickled with Love’। উল্লেখযোগ্য বিষয়, ব্যবসা থেকে আয়ের সমস্তটাই তিনি ব্যয় করেন অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আর ৮৮ বছরের দিল্লি নিবাসী বৃদ্ধার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প রীতিমত সাড়া জাগিয়েছে নেট পাড়ায়।
একটি সাক্ষাৎকারে বৃদ্ধার নাতনি পেশায় চিকিসক রাধিকা বাত্রা জানান, স্বামীকে হারিয়ে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন ঊষা গুপ্তা। সে সময় অসহায় মানুষের জন্য উনি কিছু করতে চাইছিলেন। সেখান থেকেই ‘Pickled with Love’-এর পথ চলা শুরু। উস দেবীর হাতের জাদুতে খুব অল্প সময়ে বিখ্যাত হয়ে যায় ‘Pickled with Love’। বিক্রি বাড়তেই থাকে। যদিও রাধিকা জানিয়েছেন, ব্যবসা বেশি বড় করার উদ্দেশ্য নেই তাঁদের। গুণমান ঠিক রাখতে হাতে বানানো আচার ও চাটনিই তাঁরা বিক্রি চান। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই আচার বিক্রির টাকায় ৬৫ হাজার মানুষকে সাহায্য করেছেন তাঁরা, এছাড়াও বিভিন্ন চ্যারিটি কাজে নানান সময় সংস্থার পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়।
৮৮ বছর বয়েসে যেখানে অনেকেই শয্যাশায়ী হন, সেখানে এই বয়েসেও ঊষা দেবীর প্রাণশক্তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে গোটা দেশকে। শুধু আচার তৈরি বা বিক্রি নয়, প্রত্যেক ক্রেতাকে নিজের হাতে লেখা একটি শুভেচ্ছা বার্তাও দেন ঊষা দেবী। যা ‘Pickled with Love’ কে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
Comments are closed.