আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে সংঘাত যে চরম আকার নিচ্ছে তাতে যুদ্ধেরই ছায়া দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল। তেল ও সোনার দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এবার সজোরে বাজতে শুরু করেছে ইরান-আমেরিকা যুদ্ধের দামামা। তাহলে কি ফের একটি পুরোদস্তুর যুদ্ধের মুখে বিশ্ব?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যুইট করে বলেছেন, ইরান বেশি বাড়াবাড়ি করলে খুব দ্রুত বড় হামলা হবে। ইরানের ৫২ টি টার্গেট ঠিক করে রাখা আছে। গত শুক্রবার মার্কিন ড্রোন হানায় ইরানের অন্যতম সেনাকর্তা কাসেম সোলেমানি নিহত হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা ইরান। সে দেশের ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেইনি বদলার নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলেছেন। বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, এর শেষ দেখে ছাড়ব। এরই মধ্যে শনিবার শিয়া প্রভাবিত কোম শহরের ঐতিহ্যমণ্ডিত মসজিদের উপর ইরান যুদ্ধের প্রতীক লাল পতাকা উড়িয়েছে। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অর্থ হল দেশবাসীকে যুদ্ধের জন্য প্রন্তুত থাকতে বলা। ওই রাতেই বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে এবং বালাড বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বিমান হামলার খবর মিলেছে। বাগদাদে মার্কিন গ্রিন জোনেও ইরান হামলা করেছে বলে আমেরিকার অভিযোগ। সব মিলিয়ে দু’দেশের মধ্যে কিন্তু একটা যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব কাজ করছে। হুমকি, পাল্টা হুমকির আবহে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস যুদ্ধ পরিস্থিতির সম্ভাবনা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইরান যখন মসজিদের মাথায় যুদ্ধের প্রতীক লাল পতাকা উড়িয়েছে, তখনই ট্রাম্প ৫২ টি টার্গেটকে নিশানা করা হয়েছে বলে পাল্টা ট্যুইট করেছে। কী সেই ৫২ টি টার্গেট? অনেকে বলছেন, কয়েক বছর আগে ইরানের মার্কিন দূতাবাসে ৫২ জনকে পণবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তাই এবার ইরানের ৫২ টি জায়গাকে টার্গেট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর মতে, এগুলি ইরানের সংস্কৃতির পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, অনেক হয়েছে। আর নয়। এবার বড় ধরনের হামলা হবেই। ইরান বলছে, হামলা করেই দেখুক না আমেরিকা। সমুচিত জবাব পাবে।
এদিকে রবিবার ইরান জানিয়েছে, তারা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি আর মানবে না। আমেরিকা এই চুক্তি থেকে আগেই বেরিয়ে এসেছে। ইরান আঘাত হানতে পারে, এই আশঙ্কায় নানা দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে আমেরিকা। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো পাকিস্তান, ইরাক, আফগানিস্তান, সৌদি ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে কথা বলেছেন। আমেরিকা সেই দেশগুলির ভূখণ্ড ব্যবহার করতে চায় ইরানকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনও দেশই তা দিতে চায় না।
রবিবার নিহত ইরানের সেনাপ্রধান সোলেমানির দেহ এসে পৌঁছয় ইরান। সেই শোকমিছিলেও ‘শয়তান আমেরিকাকে চরম শাস্তি দেওয়ার দাবি ওঠে। শোকমিছিল কার্যত জনসমুদ্রের চেহারা নিয়েছিল।
Comments are closed.