দেশে এই প্রথম, পেট্রলকে ছাপিয়ে গেল ডিজেলের দাম! ডিজেলে ২৫৬ এবং পেট্রলে ২৫০ শতাংশ কর, কেন্দ্রের সমালোচনায় বিরোধীরা
লকডাউন পেরিয়ে আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে বেড়ে চলছে পেট্রল ও ডিজেলের দাম। এভাবে টানা ১৮ তম দিন, বুধবারে প্রথম অপরিবর্তিত থাকে পেট্রলের দাম। কিন্তু দামের পাল্লা একইরকম উঠতে থাকে ডিজেলে। বুধবার দিল্লিতে পেট্রলের দাম লিটারপিছু পৌঁছয় ৭৯.৭৬ টাকায়। কিন্তু ডিজেলের দাম হয় ৭৯.৮৮ টাকা প্রতি লিটার। এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটল ভারতে। দুটি জ্বালানী গত ১৮ দিনে লিটার প্রতি ১০.৪৯ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে প্রতি লিটার ডিজেল ৬১.৭৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। প্রায় দেড় বছরে, সেই দাম প্রতি লিটারে ১৮ টাকা বেড়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পিছনে কেন্দ্রের পাশাপাশি কেজরি সরকারের হাতও রয়েছে। মার্চ মাসে রাজধানীতে প্রতি লিটার পেট্রল ও ডিজেলে ৩ টাকা করে আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করে কেজরিওয়াল সরকার। তারপর করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে লকডাউনের পর দেশের রাজস্ব বৃদ্ধি করতে মে মাসে পেট্রোলে প্রতি লিটারে ১০ টাকা ও ডিজেলে প্রতি লিটারে ১৩ টাকা করে আবগারি শুল্ক আদায় করে কেন্দ্রীয় সরকার।
দেশে সবসময়ই পেট্রলের থেকে দাম অনেকটাই কম থাকে ডিজেলের। অধিকাংশ জিনিসপত্র সরবরাহকারী ট্রাক, বাস, ট্যাক্সি, ক্যাব ইত্যাদি ডিজেলে চলে বেশি। অনেকে জ্বালানির খরচ বাঁচাতে বেশি দাম দিয়ে ডিজেলচালিত গাড়ি কেনেন, যাতে মাসিক তেলের খরচ কম হয়। কিন্তু রাজধানী দিল্লিতে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে চোখ কপালে উঠেছে আম জনতার। এই ঘটনায় মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিরোধীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনভর চলছে আলোচনা।
এদিকে দিল্লির মতো পেট্রলের থেকে বেশি দামি না-হলেও, কলকাতাতেও গত কয়েকদিনে অনেকটাই বেড়েছে ডিজেলের দাম। বুধবার কলকাতায় লিটারপিছু পেট্রলের দাম ছিল ৮১.৪৫ টাকা। তবে ডিজেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৫.০৬ টাকা। এত চড়া দাম থাকায় সরকারি আলোচনা ছাড়াই বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকটি রুটের বেসরকারি বাস-মালিক। তাঁরা একটি পোস্টার সেঁটে জানিয়ে দিয়েছেন, ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে যাত্রী পরিষেবা দিতে অক্ষম। তাই বাসের পরিষেবা সচল রাখতে যাত্রীদের বর্ধিত ভাড়া দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে পোস্টারে।
করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বে সরবরাহের প্রয়োজন কমায় অপরিশোধিত তেলের দাম অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই অবস্থায় বিজেপি সরকার জ্বালানি তেলের উপর শুল্ক চাপিয়ে আয় বাড়াতে চাইছে বলে অভিযোগ। বর্তমানে সরকার ডিজেলের উপর ২৫৬ শতাংশ এবং পেট্রোলের উপর ২৫০ শতাংশ কর আদায় করছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী থেকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি।
Comments are closed.