করোনা বিধ্বস্ত শহরে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওষুধ সরবরাহ করে মানবিকতার অনন্য নজির দক্ষিণ কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রাক্তনীদের।
স্কুল পেরিয়েছেন বহুদিন আগে। কিন্তু শিক্ষকরা আজও মনের মণিকোঠায়। তাই করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে প্রবীণ ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রাক্তনীরা। সংকটের সময় প্রিয় শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি তাঁরা পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার, ওষুধ, মুদিখানার সামগ্রী ইত্যাদি।
বছরভরই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে থাকে সাউথ পয়েন্টের প্রাক্তনীদের সংগঠন ‘পয়েন্টার্স হু কেয়ার’ (PWC)। কিন্তু করোনাকালে তাঁদের দায়িত্ব যেন আরও বেড়ে গিয়েছে। প্রিয় শিক্ষকদের যে কোনও প্রয়োজনে ছুটে যাচ্ছেন অরুণিমা, অনুপম, সৌম্য, শর্মিলা, অভীক, নিবেদিতা ও জয়িতারা। ২০০ এর বেশি শিক্ষকের সঙ্গে ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ। কোনওকিছুর প্রয়োজন হলেই শিক্ষকদের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন তাঁরা। এক প্রাক্তনী দায়িত্ব নিয়েছেন নিজের রিটেল শপ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধপাতি শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। কেউ কেউ পৌঁছে দিচ্ছেন মুদিখানার জিনিস। এভাবেই দায়িত্ব ভাগ করে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ইংরেজির প্রাক্তন শিক্ষক শৈল গুপ্তের ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা হোক কিংবা ৯০ বছরের অশীতিপর শিক্ষিকা দীপালি সিনহা রায়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, সবকিছুই হাসিমুখে করছেন তাঁদের প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েও প্রাক্তন শিক্ষাগুরুদের বাড়িতে ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়া নিয়ে সাউথ পয়েন্টের প্রাক্তনীদের সাফ কথা, দুর্যোগে পীড়িতদের পাশে দাঁড়ানোর মন্ত্র তো আমাদের শিক্ষকরাই দিয়েছিলেন। তাই তাঁদের পাশে থাকতেই হবে।
ছাত্রছাত্রীরা নাকি স্কুল পার করলেই সব ভুলে যান। সমাজের কাছে নাকি প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোন কদর নেই। এ সমস্ত যে স্রেফ কথার কথা, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল ‘পয়েন্টার্স হু কেয়ার’।
Comments are closed.