পুজো আসতে হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাকি। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া যাচ্ছে না। মন ভালো করার ঠিকানা নিয়ে হাজির হচ্ছে রাজ্য পরিবহণ নিগম বা WBTC। পয়লা অক্টোবর থেকে চালু হচ্ছে হেরিটেজ ক্রুজ পরিষেবা বা Ganges River Cruise। সুদৃশ্য লঞ্চে চড়ে গঙ্গার হাওয়া খেতে খেতে ঘুরে আসা যাবে কলকাতার ঐতিহাসিক ঘাটগুলো। খরচ? মাত্র ৩৯ টাকা।
৯০ মিনিটের লঞ্চযাত্রা শুরু ও শেষ হবে মিলিনিয়াম পার্কে। পথে থাকছে সারদা মায়ের স্মৃতি বিজড়িত মায়ের ঘাট, ভূতনাথ ও শ্মশান কালীর মন্দির-সহ নিমতলা শ্মশান ঘাট, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মতো মনীষীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া থাকছে ঐতিহাসিক আর্মেনিয়ান ঘাট, বিবাদি বাগ স্টেশন, স্ট্র্যান্ড রোড ঘাট, চাঁদপাল ঘাটের মতো কলকাতার একাধিক হেরিটেজ স্থান। শুধু চোখ মেলে দেখাই নয়, গঙ্গাবক্ষে ক্রুজ রাইডের সময় প্রতিটি ঘাটের ইতিহাস সম্পর্কে যাত্রীদের বর্ণনা করবেন, তাঁদের নানা জানা-অজানার সুলুকসন্ধান দেওয়ার জন্য থাকবেন ট্যুর গাইড। থাকবে গঙ্গা আরতি দেখার সুযোগ।
গঙ্গা ভ্রমণের জন্য বিশেষভাবে সাজানো এই লঞ্চে আর কী কী থাকবে?
মাত্র ৩৯ টাকা টিকিটে গঙ্গা ভ্রমণের পাশাপাশি যাত্রীদের গঙ্গা সফরের অনুভূতি অনন্য করতে লঞ্চে থাকছে ক্যাফেটেরিয়া। যেখানে অল্প খরচে পাওয়া যাবে চা, কফি ও স্ন্যাক্স। যাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য গোটা যাত্রাপথেই বাজবে রবীন্দ্র সঙ্গীত। মিলবে পানীয় জল ও শৌচাগার ব্যবহারের সুযোগ।
মনোরম এক অভিজ্ঞতা নেবেন আর এই টেক স্যাভি যুগে বন্ধুদের জানাবেন না তা হয় নাকি? তাই তার জন্য এই লঞ্চে থাকছে বিনামূল্যের সেলফি বুথ।
সপ্তাহের সাতদিন ট্যুর চলবে। সোম থেকে শুক্রবার দিনে দু’বার, বিকেল ৪টে এবং সন্ধে ৬টায় লঞ্চ যাত্রার ব্যবস্থা থাকবে। শনি ও রবিবার অবশ্য চারবার অর্থাৎ বেলা ১২টা, দুপুর ২টো, বিকেল ৪টে ও সন্ধে ৬টায় ভ্রমণের সুযোগ থাকছে। টিকিট মিলবে মিলেনিয়াম পার্ক ঘাটেই। করোনা পরিস্থিতিতে স্যানিটাইজিংয়ের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ফিজিক্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে একসঙ্গে ১৫০ জন যাত্রী উঠতে পারবেন বিশেষ লঞ্চে। আগামীতে শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্যও ভাড়ায় পাওয়া যাবে লঞ্চটি।
এই নয়া পরিষেবা প্রসঙ্গে রাজ্য পরিবহণ নিগমের এমডি রজনবীর সিংহ বলেন, সিঙ্গাপুর, লন্ডনের মতো জায়গায় ক্রুজ রাইড ভীষণ জনপ্রিয়। স্থানীয় লোকজন কিংবা পর্যটক, সবার কাছেই সমান আকর্ষণীয় এই রাইড। এবার কলকাতাতেও তা চালু হচ্ছে। কিন্তু এখানকার এক্স ফ্যাক্টর হল টিকিট মূল্য। এত অল্প খরচে অন্য কোথাও এই পরিষেবা মিলবে না।
তাই মাথার উপর শরতের আকাশ, গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়া, সঙ্গীত মূর্ছনা আর হাতে এক কাপ কফি নিয়ে বেড়িয়ে আসতে চাইলে কেটে ফেলুন ক্রুজ রাইডের টিকিট। প্রাচীন কলকাতার জানা-অজানা কথা শুনতে শুনতে, হেরিটেজ গঙ্গা ঘাটগুলো ছুঁয়ে আসার অভিজ্ঞতা নেহাত যে মন্দ হবে না তা হলফ করে বলা যায়।
Comments are closed.