জমি বিতর্কে অমর্ত্য সেনকে পাল্টা পত্রাঘাত উপাচার্যের, ফোনালাপ বিতর্ককে বললেন ‘সার্কাস’
অমর্ত্য সেনের চিঠির প্রত্যুত্তর দিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য
বিশ্বভারতী জমি বিতর্কে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি সোমবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কড়া চিঠি লিখেছিলেন অমর্ত্য সেন। সেই চিঠির শব্দচয়ন নিয়ে অমর্ত্যবাবুকে নিশানা করেছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে পাল্টা চিঠি দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানালেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমি-বিবাদ থেকে ফোনালাপ পর্ব সব ক্ষেত্রেই নিজেদের অবস্থানে অটল বিশ্বভারতী। অমর্ত্যবাবুর শান্তিনিকেতনের জমি রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে মাপজোক করার প্রস্তাব দিয়ে উপাচার্য চিঠিতে লিখেছেন, বিশ্বভারতীর জমি পুনরুদ্ধারই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। নিশ্চয়ই অমর্ত্য সেনেরও এ ব্যাপারে সমর্থন পাব।
উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতে অমর্ত্য সেন লিখেছিলেন, শান্তিনিকেতনে তাঁর যে জমি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তা তাঁর বাবা বিশ্বভারতীর কাছ থেকে নয়, বাজার থেকে কিনেছিলেন। এই জমির জন্য প্রতি বছর খাজনা ও পঞ্চায়েত কর দিয়ে থাকেন তিনি।
যার প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে যাওয়ার যে অভিযোগ তাঁরা করছেন তার সহজ নিষ্পত্তি হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও রাজস্ব দফতরের সাহায্যে। তাদের সার্ভেয়ার এসে এই জমির মাপজোক নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এই বিতর্কের মীমাংসা করুক। সোমবারের চিঠিতে তাঁকে হয়রান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিশ্ববন্দিত অর্থনীতিবিদ। যার প্রেক্ষিতে উপাচার্য চিঠিতে লিখেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে কোনওভাবে অপদস্ত করতে চায় না বা তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির উত্তারাধিকার খর্ব করতে চায় না।’
তাঁর সঙ্গে জুন মাসে উপাচার্যের ফোনালাপের কথা অস্বীকার করে অমর্ত্যবাবু চিঠিতে লিখেছিলেন, সে সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। এই ফোনালাপের সত্যতা প্রমাণ করতে অমর্ত্যবাবুকে চ্যালেঞ্জ করে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পাল্টা দাবি, গত জুন বা জুলাই মাসে অরবিন্দ নামে জনৈক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে বলেন যে অধ্যাপক অমর্ত্য সেন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। উপাচার্যের কটাক্ষ, উন্নত প্রযুক্তির যুগে অধ্যাপক সেন আদৌ তাঁকে ফোন করেছিলেন কিনা তা টেলিকম কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। এভাবেই তর্কের মিমাংসা করা যায়। অমর্ত্যবাবুর উষ্মার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। ‘অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের আন্তরিক মনোযোগের জন্য’ শিরোনামে এই চিঠিতে উপাচার্য লেখেন, ‘অধ্যাপক সেন যেভাবে ফোন কলের বিষয়টি অস্বীকার করছেন, তা আমাদের ধারণারও বাইরে।’
সংবাদমাধ্যমে দেওয়া অমর্ত্য সেনের বিবৃতি প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী চিঠিতে লিখেছেন, ‘অধ্যাপক সেন প্রথমে অস্বীকার করার চেষ্টা করছিলেন যে, উপাচার্যের সঙ্গে কখনওই তাঁর ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ ঘটেনি! পরে অবশ্য তিনি একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন যে, উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্বভারতীর একটি সেমিনারে তাঁর দেখা হয়। যেখানে উপাচার্য সভাপতিত্ব করছিলেন।’
Comments are closed.