NARADA য় ক্লিনচিট মুকুলকে? কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় নেই উল্লেখ
প্রার্থীদের মনোয়ন জমা দেওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী হলফনামা দিয়ে জানাতে হয় তাঁদের বিরুদ্ধে কী কী মামলা রয়েছে বা আদৌ আছে কিনা। জমা দেওয়া সেই হলফনামায় মুকুল রায় কোথাও তাঁর বিরুদ্ধে চলা নারদ মামলার উল্লেখ্য করেননি
নারদা মামলায় সোমবার সাত সকালে ৩ তৃণমূল হেভিওয়েট এবং প্রাক্তন মেয়রের গ্রেফতারের পরই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, মুকুল, শুভেন্দুকে ছাড় কেন? এবার দেখা গেল নির্বাচন কমিশনকে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের জমা দেওয়া হলফনামায় নারদা মামলার কোনও উল্লেখ নেই! তাহলে কি নারদ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই ক্লিনচিট পেয়ে গিয়েছেন মুকুল?
জীবনে এই প্রথমবার ভোটে জিতেছেন মুকুল রায়। কিন্তু ভোটে লড়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের জমা দেওয়া হলফনামায় নারদা মামলার কোনও উল্লেখ করেননি মুকুল রায়। সোমবারের গ্রেফতারির পর যা নিয়ে নতুন করে জল ঘোলা হবে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কী হয়েছিল?
প্রার্থীদের মনোয়ন জমা দেওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী হলফনামা দিয়ে জানাতে হয় তাঁদের বিরুদ্ধে কী কী মামলা রয়েছে বা আদৌ আছে কিনা। জমা দেওয়া সেই হলফনামায় মুকুল রায় কোথাও তাঁর বিরুদ্ধে চলা নারদ মামলার উল্লেখ্য করেননি। অথচ নারদ কাণ্ডে মূল অভিযুক্তদের তালিকায় তাঁর নাম আছে!
সাসপেন্ডেড আইপিএস এসএমএইচ মির্জার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মুকুল রায়ের হয়ে নারদ কর্তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। আর এখানেই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে তবে কী মামলা থেকে ইতিমধ্যেই নিষ্কৃতি পেয়ে গিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়?
নারদ মামলায় আরেক অভিযুক্ত বিজেপি নেতা তথা বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য তাঁর হলফনামায় নারদ মামলার কথা উল্লেখ করেছেন। যদিও মামলা সংক্রান্ত বিস্তারিত কিছু জানাননি শুভেন্দু।
শুভেন্দু অধিকারীর হলফনামার অংশ
সম্পূর্ণ উলটো ছবি তৃণমূল শিবিরে। সেখানে ধৃত ৪ জনের মধ্যে ৩ জন বিধায়ক। নারদ মামলায় ধৃত সুব্রত মুখার্জি, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র হলফনামায় নারদ মামলার কথা উল্লেখ করেছেন। কেস নাম্বার উল্লেখ্য করার পাশাপাশি তৃণমূলের তিন হেভিওয়েট কোন কোন ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে বিস্তারিত জানিয়েছেন হলফনামায়।
ধারা ১২০বি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ধারা ৭ সরকারি প্রতিনিধির অনৈতিকভাবে অর্থ গ্রহণ, ধারা ১৩(১) (এ),১৩(১) (ডি) এবং ১৩(২) দুর্নীতি দমন আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিনিধি দ্বারা অপরাধমূলক কাজে যুক্ত, ইত্যাদি একাধিক ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে বলে হলফনামায় জানিয়েছেন তৃণমূলের গ্রেফতার হওয়া বিধায়করা।
সুব্রত মুখার্জির হলফনামার অংশ
অর্থাৎ একটা জিনিস পরিষ্কার, নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী তৃণমূলের ৩ বিধায়কের নারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ার খবর মিললেও বিজেপির হয়ে যে দু’জন অভিযুক্ত ভোটে লড়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে সেই বাধ্যবাধকতা ছিল না। এখন প্রশ্ন হল, এটা হলফনামায় তথ্য গোপনের আওতায় পড়ে কিনা।
মুকুল রায় প্রসঙ্গে সিবিআই কর্তারা জানিয়েছেন নারদ স্ট্রিং অপারেশন যখন হয়, মুকুল রায় সে সময় রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁকে গ্রেফতার করতে গেলে রাজ্যসভার স্পিকারের অনুমতি প্রয়োজন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, মুকুল রায়কে নিজে হাতে টাকা নিতে দেখা যায়নি।
Comments are closed.