পার্টি কংগ্রেসের সাংগঠনিক রিপোর্টে সমালোচিত আলিমুদ্দিন। নতুন সম্পাদক পদে লড়াই রাঘাভুলু, মানিক, বৃন্দার
হায়দরাবাদে শুরু হওয়া সিপিএম পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক সাংগঠিক রিপোর্টে তীব্র সমালোচনা করা হল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে। ২০১৬ রাজ্য সিপিএম বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার যে রাজনৈতিক লাইন নিয়েছিল, তাকে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে এই সাংগঠনিক রিপোর্টে। সিপিএম সূত্রের খবর, সাংগঠনিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার যে প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গ পার্টি ২০১৬ বিধানসভা ভোটের আগে সেন্ট্রাল কমিটির মিটিংয়ে পেশ করেছিল, তা খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু তা সত্বেও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, কংগ্রেসের সঙ্গে যেভাবে আসন সমঝোতা করেছে, তা দলের লাইনের সঙ্গে একেবারেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার তত্ত্ব বুধবারই পার্টি কংগ্রসের শুরুতে খারিজ করে নজিরবিহীনভাবে রাজনৈতিক প্রস্তাব পেশ করেছেন দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। এই রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে পার্টি কংগ্রেসে ভোটাভুটি হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। এই অবস্থায় সাংগঠনিক রিপোর্টেও সীতারাম ইয়েচুরি এবং আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের লাইন সমালোচিত হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইয়েচুরির সাধারণ সম্পাদক থাকা নিয়েই। শনিবার এই সাংগঠনিক রিপোর্ট নিয়ে পার্টি কংগ্রেসে আলোচনা হওয়ার কথা। তার আগে সূর্যকান্ত মিশ্ররা সমালোচিত হওয়ায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটপন্থীরা যথেষ্টই চাপে থাকবেন। বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলিলের ওপর আলোচনায় সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারও সাধারণ সম্পাদকের তত্ত্বের সমালোচনা করেন।
এদিকে রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক দুই দলিলেই সীতারাম ইয়েচুরি পর্যুদস্ত হওয়ার পর হায়দরাবাদে প্রশ্ন উঠছে, তিনি কি আদৌ সাধারণ সম্পাদক থাকবেন ? রাজনৈতিক লাইন নিয়ে ভোট হলে প্রকাশ কারাট গোষ্ঠীরই জেতার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিন ২২ এপ্রিল দলের সাধারণ সম্পাদক বদলেরও প্রশ্ন উঠবে। সিপিএম সূত্রের খবর ইয়েচুরি সরে গেলে, সাধারণ সম্পাদক পদে জোর লড়াই হবে অন্ধ্র প্রদেশের বি ভি রাঘাভুলুর সঙ্গে ত্রিপুরার মানিক সরকারের মধ্যে। রাঘাভুলু পুরোপুরি প্রকাশ কারাটপন্থী। কংগ্রেস সম্পর্কে অবস্থানেও তিনি অনড়। ভোটাভুটিতে তাঁর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। কিন্তু ত্রিপুরায় সরকার চলে যাওয়ার পর সেই রাজ্য এবং বাংলার কথা মাথায় রেখে মানিক সরকারেরও সাধারণ সম্পাদক যথেষ্টই সম্ভাবনা থাকছে বলে সিপিএমের অনেক নেতা মনে করছেন। সিপিএমের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘রাঘাভুলু এবং মানিক সরকার যে কেউই সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। কারও নামেই কারাটের কোনও আপত্তি থাকবে না। কারণ, বকলমে দল চালাবেন সুপার সেক্রেটারি প্রকাশ কারাট নিজেই।’ তবে সিপিএমের অন্য এক অংশের খবর, রাঘাভুলু এবং মানিক সরকারের মধ্যে ঐক্যমত্য না হলে, ভোটাভুটি এড়িয়ে মাঝখান থেকে বৃন্দা কারাটও সাধারণ সম্পাদক হয়ে যেতে পারেন। এই সম্ভবনা নিয়েও আলোচনা চলছে হায়দরাবাদে।