পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার নবান্ন সভাঘর থেকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রকল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তারিত জানান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আমাদের সরকার ক্ষমতায় এলে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প চালু করব। ভারত সহ সারা বিশ্বে এতবড় প্রকল্প এই প্রথম বলেও দাবি করেন তিনি।
ঋণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দশম শ্রেণী পাস করার পরেই এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে ছাত্ররা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বাধিক ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করা যাবে। ঋণের মেয়াদ ১৫ বছর পর্যন্ত থাকবে। তাঁর কথায়, অনেকেই মাঝ পথে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। সেরকম কেউ আবার পড়াশুনা করতে চাইলে যাতে ঋণ পেতে সুবিধা হয় সে কারণেই বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত রাখা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডিপ্লোমা, ডাক্তারি, ভোকেশোনাল কোর্স এবং গবেষণার জন্য এই ঋণ পাওয়া যাবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, আইএএস, আইপিএস, ডবলুবিসিএস মত পরীক্ষার পড়াশোনার জন্যও ঋণ পাওয়া যাবে। এমনকী বিদেশে উচ্চ শিক্ষার খরচের জন্যও এই লোন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ঋণ শোধ করতে ছাত্র ছাত্রীরা যাতে পর্যাপ্ত সময় পান সেই কারণে ঋণের মেয়াদ ১৫ বছর পর্যন্ত রাখা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে বাবা মায়েদের আর চিন্তা করতে হবে না। ঋণ পেতে ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনওরকম সমস্যার পড়তে না হয়, সে ব্যাপারটিও দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
শিক্ষাদফতরের ওয়েবসাইট গিয়ে ঋণের জন্য ছাত্রছাত্রীরা আবেদন করতে পারবে। এদিন এই সংক্রান্ত একটি টোল ফ্রি নম্বর দেওয়া হয়, 1800-102-80-14। সরকারি ব্যাঙ্কের পাশাপাশি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মাধ্যমেও এই ঋণ পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের কথা মনে করিয়ে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে যাতে কোনও রকম প্ৰতরণা কেউ করতে না পারে সে ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, সহ ব্যাঙ্কগুলিকে সতর্ক থাকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাত্রী, ছাত্রী অভিভাবক দেরও ‘জালিয়াতদের’ থেকে সতর্ক থাকার বার্তা দেন মমতা ব্যানার্জি।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, মুম্বইয়ের টাটা ক্যান্সার হাসপাতালের আদলে দুটি ক্যান্সার হসপিটাল গড়ে তোলা হবে। একটি ক্যান্সার হাসপাতাল হবে এসএসকেএম হাসপাতালে এবং দ্বিতীয় ক্যান্সার হাসপাতাল হবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই রাজ্য থেকে ২৫% রোগী মুম্বইয়ের টাটা ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। এখন থেকে তাদের আর মুম্বই যেতে হবে না। বাংলার দুই জায়গায় টাটার সঙ্গে হাত মিলিয়ে জোড়া ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ছে রাজ্য সরকার।
Comments are closed.