চিট ফান্ড কাণ্ডে গত বৃহস্পতিবার সিবিআই গ্রেফতার করেছে রাজ্যের বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা ‘এই সময়’ পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক সুমন চট্টোপাধ্যায়কে। একদিন নামের নয়া একটি পত্রিকা চালু করার জন্য চিট ফান্ড সংস্থা আই কোরের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
কিন্তু সুমন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির বিষয়ে বাংলার প্রথম সারির কোনও সংবাদমাধ্যম সেভাবে খবর করেনি বা দায়সারাভাবে খবরটি করেছে। যদিও একাধিক জাতীয় সংবাদমাধ্যমে সুমন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির খবর প্রকাশিত হয়েছে। সুমন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির খবর প্রকাশ না করার জন্য বাংলার প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলির ভূমিকার সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হল আউটলুক পত্রিকায়। আউটলুক-এর সম্পাদক রুবেন ব্যানার্জি বিষয়টিকে অনৈতিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন।
‘হোয়াই কলকাতা মিডিয়াজ সাইলেন্স ওভার অ্যান এডিটরস অ্যারেস্ট ইজ আনএথিকাল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আউটলুক-এর সম্পাদক রুবেন ব্যানার্জি লিখেছেন, বাংলা সংবাদমাধ্যম যেভাবে বিষয়টিকে ব্ল্যাক আউট করেছে, সেটাই এখন রাজ্যে সবচেয়ে বড় খবর। বাংলার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের নাম উল্লেখ করে রুবেন লিখেছেন, আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়, বর্তমানের মতো সংবাদপত্রগুলি বিষয়টিকে কোনও গুরুত্বই দেয়নি। অথচ তাঁর গ্রেফতারির পরদিন এই সময় পত্রিকায় সম্পাদকের নামের জায়গায় সুমনের নাম বাদ দিয়ে পত্রিকার ক্রীড়া সম্পাদকের নাম লেখা হয়েছে।
আউটলুক-এর সম্পাদক লিখেছেন, বাংলার বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমও খবরের কাগজের মতোই এই খবর সেন্সর করেছে। এবিপি আনন্দ, জি ২৪ ঘন্টার মতো খবরের চ্যানেলগুলোও বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।
আউটলুক-এর সম্পাদক লিখেছেন, সুমন চট্টোপাধ্যায় বাংলা সংবাদ জগতে সাধারণ কোনও সাংবাদিক নন। এই সময়ের দায়িত্বে আসার পূর্বে সুমন চট্টোপাধ্যায় আনন্দবাজারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আনন্দবাজার গোষ্ঠীর সংবাদ চ্যানেল স্টার আনন্দ (বর্তমানে এবিপি আনন্দ) চালুর পেছনেও সুমনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। মাঝে একদিন নামে নিজে একটি সংবাদপত্র খুলেছিলেন সুমন।
রুবেন লিখেছেন, সুমন চট্টোপাধ্যায় দোষী কিনা সেটি ভিন্ন বিষয়। কিন্তু অন্য একজন সম্পাদক কয়েক বছর আগে যখন চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন, তখন সমস্ত সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে বড় করে খবর হয়েছিল। আউটলুক-এর সম্পাদকের মতে, যে কারণেই সুমন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির খবর বাংলার সংবাদমাধ্যম না করে থাকুক না কেন, তা যুক্তিযুক্ত নয়। সাধারণ মানুষের এবং পাঠকদের সংবাদ জানার অধিকার রয়েছে।
Comments are closed.