সোমবার লন্ডনবাসী জনৈক সৈয়দ সুজা নামে এক হ্যাকার দাবি করেছেন, ভারতে নির্বাচনের কাজে যে ইভিএম ব্যবহার করা হয়, সেগুলিতে কারচুপি সম্ভব। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই হ্যাকারের দাবি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশজুড়ে পড়ে গিয়েছে তুমুল আলোড়ন। এর কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের দাবি, কোনওভাবেই কারচুপি করা সম্ভব নয় ইভিএম’এ। ভিলাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ডিরেক্টর ও নির্বাচন কমিশনের ইভিএম সংক্রান্ত টেকনিক্যাল এক্সপার্ট কমিটির সদস্য, টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ রজত মুনা জানিয়েছেন, প্রতিটি ইভিএম হল এক একটি আলাদা যন্ত্র। যা দূরসঞ্চালিত কোনও রিমোট বা ডিভাইস দিয়ে কন্ট্রোল করা বা হ্যাক করা সম্ভব নয়। ইভিএম ‘ট্যাম্পার প্রুফ’ বলেও দাবি তার।
যদিও সৈয়দ সুজা নামের ওই হ্যাকারের দাবি, এটা ঠিক যে দূর সঞ্চালনের মাধ্যমে হ্যাকিং সম্ভব নয় ইভিএমে। কিন্তু মেশিনগুলিতে আগে থেকে কারচুপি করে রাখা সম্ভব। তাঁর দাবি, একটি গ্রাফাইট বেসড ট্রান্সমিটারের সাহায্যেই এসব সম্ভব। এতেই বেজায় চটেছে কমিশন। ওই হ্যাকারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন।
উল্লেখ্য, যে অনুষ্ঠানে এদিন এই দাবি করেছেন ওই হ্যাকার সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। হ্যাকিং বিষয়ক ওই অনুষ্ঠানটি ফেসবুকেও সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। বিরোধীরা কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছেন তাদের ইভিএমে ভরসা নেই। তাই ব্যালট পেপারেই সম্ভব হলে ভোট হোক আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে। গত ১৯ জানুয়ারির বিরোধী দলগুলির ব্রিগেড সমাবেশের পর কলকাতায় একাধিক বিরোধী দলের নেতৃত্ব প্রকাশ্যে ইভিএমের উপর অনাস্থা ব্যক্ত করেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন। ইভিএম নিয়ে নিজেদের দাবি ও কমিশনের কাছে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বিরোধীদের তরফ থেকে চার সদস্যের এক কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিরোধীদের আরও দাবি, যদি এই শেষ লগ্নে ব্যালটে নির্বাচন করানো সম্ভব না হয় তবে ইভিএমে যেন ভিভিপ্যাটের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে বোঝা যায় ভোট কোথায় পড়ছে।
যদিও এদিন ইভিএম ইস্যুতে ট্যুইটারে বিরোধীদের কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি লিখেছে, রাফাল, কৃষি ঋণ মুকুবের দাবির পর এবার ইভিএম নিয়ে মিথ্যাচার করছে বিরোধীরা। তাঁর প্রশ্ন, ইউপিএ জমানাতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলে, সেখানেও কি নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল?
Comments are closed.