গত সপ্তাহেই মার্ক্সবাদী সম্পাদনা সোশ্যালিস্ট অ্যাপিলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, ভেনেজুয়েলায় নির্বাচিত নিকোলাস মাদুরোর সরকার ফেলে দিতে চাইছে আমেরিকা। এর জন্য ওয়াশিংটন সে দেশের বিরোধী দল, সেনা ও কিছু সরকারি আধিকারিককেও মদত দিচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছিল। সেই আশঙ্কাই সত্যি করে ক্রমে ভেনেজুয়েলায় তৈরি হচ্ছে রাজনৈতিক সংকটের পরিস্থিতি। আর এই ভেনেজুয়েলা সংকটকে কেন্দ্র করে ফের পরস্পরের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে বিশ্বের দুই সুপার পাওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ইতিমধ্যেই আমেরিকার সঙ্গে সমস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক বাতিল করেছেন মাদুরো। এই পরিস্থিতিতে মাদুরোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পুটিনের রাশিয়া।
গত বছর ২০ শে মে ভেনেজুয়েলায় নির্বাচনে জিতে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নিকোলাস মাদুরো। তবে সেই নির্বাচনে অংশ নেয়নি দেশের বিরোধী দলগুলি। কিন্তু নিকোলাস মাদুরো রাষ্ট্রপতির পদে বসার পরই ফের গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে বিরোধীরা। বিরোধী দলের নেতা জোয়ান গুইডো ইতিমধ্যেই নিজেকে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা করে দিয়েছেন। দাবি করেছেন, দেশের সেনা তাঁর পাশে আছে। সূত্রের খবর, নিকোলাস মাদুরোর বিরোধীদের মদত দিচ্ছে আমেরিকা। তারা চায় জোয়ান গুইডোকে ক্ষমতায় বসাতে।
অন্যদিকে, আমেরিকার প্রবল প্রতিপক্ষ রাশিয়া চাইছে মাদুরোই প্রেসিডেন্ট পদে থাকুন। কারণ, মাদুরো ক্ষমতা থেকে সরলে সেখানে একচেটিয়া রাজত্ব কায়েম করবে আমেরিকা। তাহলে ভেনেজুয়েলা থেকে তেল আমদানি করা কঠিন হবে তাদের।
সূত্রের খবর, নিকোলাস মাদুরোর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে সুরক্ষা দিতে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সেনাকে ভেনেজুয়েলায় পাঠিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার বেসরকারি সেনা বাহিনীর একটি কন্টিনজেন্ট ভেনেজুয়েলায় রয়েছে, তবে তাঁরা ঠিক কবে সেখানে গেছেন বা কী কারণে গেছেন তা নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি সূত্রটি।
আর একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, ভেনেজুয়ালায় রাশিয়ার এই বেসরকারি সেনার সংখ্যা প্রায় ৪০০। যদিও গোটা বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে রাজ হননি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি বা ভেনেজুয়েলার তথ্যমন্ত্রী।
জানা গেছে, এই বেসরকারি সেনা বাহিনী রাশিয়া সরকারের হয়ে অনেক অপারেশনে অংশ নেয়। সিরিয়া ও ইউক্রেনেও তাদের পাঠানো হয়েছিল। এই বাহিনীর সকলেই রাশিয়ার প্রাক্তন সেনা কর্মী বলে খবর।
কিউবার বর্তমান সরকার ভেনেজুয়েলার নিকোলাস মাদুরো সরকারে ঘনিষ্ঠ, তাই এই বেসরকারি সেনা বাহিনীর যাতায়াতের সুবিধার্থে কিউবায় একটি বিমান রাখা হয়েছে। যদিও সরকারি সূত্রে এর কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি।
Comments are closed.