অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি: সিএএ নিয়ে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ আছে, ক্ষমতায় থাকলেই হুটহাট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ফের প্রশ্ন তুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দিন আগেই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় এক প্রতিবেদন লেখেন নোবেলজয়ী দম্পতি অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি এবং এস্থার ডুফলো। সেখানে নাগরিকত্ব আইনকে অভিশাপ বলে আখ্যা দিয়ে তা নিয়ে কেন্দ্রের আরও ভাবনা চিন্তা জরুরি বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা।
শনিবার সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ জানিয়েছেন, যে সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জীবনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে, সেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যে কোনও প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারের উচিত অত্যন্ত সর্তকতা অবলম্বন করা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে যখন গোটা দেশে আন্দোলন চলছে, সে সময় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রণয় রায়কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, ক্ষমতায় থাকলে যে কোনও সিদ্ধান্ত হুটহাট করে নিয়ে ফেললেই হয় না, ভেবে চিন্তে নিতে হয়। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি এই কথা বলছেন বলে দাবি করেছেন অভিজিৎ। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্ট এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণও রয়েছে প্রশাসনে।
প্রশাসন যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাহলে এই আইন নিয়ে শুধু হিন্দু, মুসলিমদেরই নয়, যে কোনও মানুষের কাছেই সেটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। তিনি বলেছেন, সীমান্তবর্তী কোন গ্রামে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় নাগরিকদের তালিকা তৈরির দায়িত্বে যিনি থাকবেন, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে কোনও কাউকে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে পারেন। বা কিছু টাকার বিনিময় কোনও ব্যক্তির নাম তালিকায় ঢুকিয়েও দিতে পারেন। সুতরাং, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দেখা উচিত গোটা বিষয়টা। এ বিষয়ে সরকারের প্রশাসনিক দক্ষতা আরও কার্যকর হওয়া উচিত বলেই মনে করেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ। সংখ্যা এবং ক্ষমতা থাকলেই যে হুটহাট করে কোনও সিদ্ধান্ত আগুপিছু না ভেবে নেওয়া যায় না, সে কথাও এদিন মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এমন কিছু বিষয় সিএএ তে আছে, যা যথেষ্ট চিন্তার কারণ হতেও পারে।
Comments are closed.