ন্যানো কারখানা গড়ার জন্য সিঙ্গুরের জমি টাটাদের দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্য মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই জমি রক্ষার লড়াইতে বাম সরকারের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। কৃষকের অনিচ্ছায় উর্বর জমি কেড়ে কিছুতেই শিল্প করা যাবে না, তৃণমূলের এই নাছোড়বান্দা দাবিতে শেষ পর্যন্ত সিঙ্গুরের মাটি ছাড়তে বাধ্য হয় টাটা গোষ্ঠী। এবার টাটাদের সেই পরিত্যক্ত কারখানার অদূরে ১০ একর জমিতে শিল্প গড়ছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। তাহলে কি মমতা শিল্পের জন্য জমি নিয়ে নিজের আগের অবস্থান বদলে ফেললেন? তৃণমূল বলছে কিছুই বদল হয়নি। উর্বর জমিতে কৃষকের অনিচ্ছায় শিল্প না গড়ার অবস্থানে এখনও অনড় মমতা। তাই সিঙ্গুরে এই কারখানা হচ্ছে পূর্ত দফতরের জমিতে। তার জন্য জমি লিজ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করতে চলেছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতর।
কিছুদিন আগেই মুখ্য মন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন ওই এলাকায় একটি কৃষি হাব হবে। সেই অনুযায়ী রতনপুরে একটি জমিতে শিল্প গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। হুগলির জেলাশাসক রত্নাকর রাও জানান, রতনপুর মৌজার ওই জমিটি আগে পূর্ত দফতরের হাতে ছিল। সেখানেই শুরু হচ্ছে কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ার উদ্যোগ। জানা গিয়েছে, ১০ একর জমির পরিকাঠামো গড়ার কাজ ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। যাতে শিল্প গড়তে আসা সংস্থাকে সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়। নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিনহা জানান, জমি ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগম সূত্রে খবর, জমি হস্তান্তরের সামান্য প্রশাসনিক কাজ বাকি রয়েছে। শেষ হলেই জমি লিজ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
শিল্প দফতরের কর্তারা বলছেন, যে সব এলাকায় কৃষিকাজ ভালো হয়, সেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প স্বাগত। বরং কৃষিভিত্তিক শিল্প হলে জায়গা কম লাগবে, তেমনই উৎপাদিত ফসল কাঁচামাল হিসেবে কাজে লেগে যাবে। কৃষি ও শিল্পের ওই পরিপূরক অবস্থানে সুবিধা হয় উৎপাদন খরচেও। তাই অবিতর্কিত জমিতে শিল্প হলে আখেরে স্থানীয়দেরই লাভ। এই ভাবনা থেকেই সিঙ্গুরে কৃষি হাব হচ্ছে বলে জানান শিল্প দফতরের কর্তারা।
Comments are closed.