সিএএ নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের কত অভিযোগ জমা পড়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে জানতে চাইল আদালত
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে দমনপীড়নের যে অভিযোগ উঠেছে, এবার যোগী আদিত্যনাথ সরকারের কাছে তার রিপোর্ট জানতে চাইল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সোমবার আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। পাশাপাশি, পুলিশের বিরুদ্ধে কতগুলি অভিযোগ জমা পড়েছে তাও জানতে চেয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য গত ১১ ডিসেম্বর সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল পাস হয় সংসদে। এর পর ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সইয়ের পর সেই বিল আইনে পরিণত হয়। এরপরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ শুরু হয় এই আইনের বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশে তীব্র আকার ধারণ করে এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। অভিযোগ ওঠে, সেখানে প্রতিবাদকারীদের উপর নির্মম অত্যাচার নামিয়ে এনেছে যোগী সরকারের পুলিশ। পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর এবং বিচারপতি সিদ্ধার্থ ভার্মার ডিভিশন বেঞ্চ পুলিশের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। জানা গিয়েছে, পুলিশ এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে মোট ৭ টি আবেদন হাইকোর্টে জমা পড়েছিল। এদিন সেগুলির শুনানি ছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টে।
পাশাপাশি আদালত জানতে চেয়েছে, পুলিশের গুলিতে যে ১৯ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে তাঁদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাঁদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে কিনা তাও। পুলিশের গুলিতে কতজন মারা গিয়েছেন তার সঠিক সংখ্যাও জানতে চেয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য নরেন্দ্র মোদী সরকার যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এসেছে তাতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষরা যদি এই সব দেশে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে থাকেন এবং আশ্রয়ের জন্য ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসে থাকেন তাহলে তাঁদেরকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু এই বিলে মুসলিমদের বিষয়ে কোনও কথাই বলা হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিবাদ। বিরোধীদের দাবি, এই আইন অসাংবিধানিক। কেননা ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করে নাগরিকত্ব দেওয়াকে সমর্থন করে না।
অন্যদিকে, দেশজুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যেভাবে পুলিশি দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে কংগ্রেস। সোবার কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন তাঁদের একটি স্মারকলিপিও দেয়। কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
Comments are closed.