‘অন্য কারোর সিনেমায় কাজ করতে দেননি বাবা’, বাবার জন্মদিনে মুখ খুললেন অঞ্জন চৌধুরীর কন্যা সুপারস্টার অভিনেত্রী চুমকি চৌধুরী
গত ২৫শে নভেম্বর ছিল বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম জনপ্রিয় পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর জন্মদিন। আজ তিনি আমাদের মধ্যে না থাকলেও তার কাজ গুলো থেকে গেছে। একসময় তার জন্যই বাংলা সিনেমা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিল, একথা এক সাক্ষাৎকারে তার মেয়ে চুমকি চৌধুরী নিজেই জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি তার জন্মদিনে সেই কথাই উঠে এলো সকলের সামনে।
বাবা অঞ্জন চৌধুরীর জন্মদিনে প্রত্যেক বছর চুমকি চৌধুরী দেশপ্রিয় পার্কের কাছে সাঁই বাবার মন্দিরে পুজো দেন এবং সকলের মধ্যে ভোগ বিতরণ করেন। এদিন তিনি সমস্ত পথ শিশুদের খাওয়ান। একবার এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারের বাবার স্মরণে কয়েকটা কথা বলেছিলেন তিনি। কী বলেছিলেন তিনি? জানাবো আপনাদের।
অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, তার বাবা কখনোই পছন্দ করতেন না তার দুই মেয়ে অন্য কারোর সিনেমায় অভিনয় করুক। মেয়েদের কাছে অন্য কোনো প্রযোজনা সংস্থা থেকে ছবির অফার এলেও তিনি সেই ছবিতে মেয়েদের কাজ করার অনুমতি দিতেন না। আর তারা দুই বোনও বাবার কথামতো কখনোই অন্য কারোর ছবিতে কাজ করতে যাননি। অভিনেত্রীর কথায়, উত্তম কুমার মারা যাওয়ার পর বাংলা সিনেমা অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, সেই সময় অঞ্জন চৌধুরী নামটাই যথেষ্ট ছিল। একটা সিনেমার ভিত্তি হলো একটা ভালো গল্প। আর অঞ্জন চৌধুরীর সিনেমা সবসময় একটা গল্প বলতো, মত চুমকির। এরপর তিনি জানান, অঞ্জন চৌধুরী রঙিন শার্ট ও পারফিউম খুব ভালোবাসতেন। তার জন্মদিনে তিনি নিজেই বাবাকে তার পছন্দমতো শার্ট এবং পারফিউম উপহার দিতেন। পরবর্তীকালে অভিনেত্রী তার প্রথম উপার্জনের টাকায় তার বাবাকে হীরের আংটি কিনে দিয়েছিলেন।
টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকের সাথে অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত বহু সিনেমায় স্ক্রিন শেয়ার করেছেন চুমকি চৌধুরী। রঞ্জিত মল্লিক প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে রঞ্জিত মল্লিক যে রঞ্জিত মল্লিক হয়ে উঠেছে তা শুধুমাত্র তার বাবা অঞ্জন চৌধুরীর জন্যই। বর্তমানে চুমকি চৌধুরীকে মাঝে মাঝেই টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায়।
আর এই অঞ্জন চৌধুরীর স্মৃতিচারণায় রঞ্জিত মল্লিক জানিয়েছিলেন, মেয়ের জন্মের পর ‘চুমকি’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন অঞ্জন চৌধুরী। সেই পত্রিকায় একবার তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তার কথায়, সেই পত্রিকার লেখা পড়তে তিনি অসম্ভব ভালোবাসতেন। একবার এই পত্রিকা পড়েই অঞ্জন চৌধুরীকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন। অভিনেতা অঞ্জন চৌধুরীকে বলেছিলেন, তিনি যথেষ্ট ভাল লেখেন, সিনেমার গল্প কিংবা চিত্রনাট্য লিখতে চাইলে তিনি লিখতে পারেন। আর তারপর থেকেই শুরু। সেই সময় একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে গেছেন দর্শকদের জন্য। আজও তার কাজ রয়ে গেছে দর্শকদের মাঝে।
সেইসময়ে তার পরিচালিত কিছু হিট সিনেমা হল, ‘হীরক জয়ন্তী’, ‘বিধিলিপি’, ‘শত্রু’, ‘ইন্দ্রজিৎ’, ‘জীবন নিয়ে খেলা’, ‘ছোট বউ’, ‘গুরুদক্ষিণা’, ‘নাচ নাগিনী নাচ’, ‘অঞ্জলি’, ‘পূজা’, ‘বাঙালি বাবু’, ‘আক্রোশ’, ‘বন্দিনী’, ‘দেবতা’র মতো একাধিক হিট সিনেমা তৈরি করে গেছেন তিনি।
Comments are closed.