সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় কেরলের পর এবার পঞ্জাব বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হল। যে শিরোমনি অকালি দল সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে ভোট দিয়েছিল, তারাও শুক্রবার কংগ্রেস বিধায়কদের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। ফলে সর্বসম্মতভাবে পঞ্জাব বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়।
এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব পাশের পাশাপাশি পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকার জাতীয় জনগণনা পঞ্জির (এনপিআর) ফর্ম সংশোধনেরও ডাক দিয়েছে। যে ফর্মে এই প্রথমবার নাগরিকের বাবার জন্মস্থান ও তারিখের কথা জানতে চাওয়া হয়েছে। কংগ্রেস সরকারের অভিযোগ, এনপিআরের সঙ্গে এনআরসির যোগ রয়েছে।
আগেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ ঘোষণা করেছিলেন তাঁর রাজ্যে এনআরসি হবে না। নয়া নাগরিকত্ব আইন, এনপিআর ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে দেশজোড়া আন্দোলনের উত্তাপ থেকে বিরত থাকেনি পঞ্জাব। এই পরিস্থিতিতে এদিন পঞ্জাব বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাঠ করেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রহ্ম মাহিন্দা। তিনি বলেন, সংসদে পাশ হওয়া নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দেশজুড়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে। পঞ্জাব বিধানসভাতেও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতিতে কেন্দ্রের নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করানো হল।
সিএএ প্রসঙ্গে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কী চলছে দেশে? প্রতিবাদ করতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে এতগুলো মানুষ প্রাণ হারালেন। জার্মানিতে ঠিক একই পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। সেখানে প্রথমে কমিউনিস্টদের টার্গেট করা হয়। তারপর ইহুদীদের হত্যা করা হয়। দেশের এই ‘অসাংবিধানিক’ আইনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ প্রয়োজন। আইনের নামে দেশে ধর্মীয় বিভেদ ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অমরিন্দর সিংহ।
শিরোমনি অকালি দলের নেতা বিক্রম মাজিঠিয়া বলেন, যদি দেশের মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রমাণ দিতে বলা হয় সে কোথায় জন্মেছে, তখন এইরকম আইনের প্রতিবাদ করা ছাড়া উপায় থাকে না। যদিও সংসদে শিরোমনি অকালি দলের নেতারা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের সমর্থন করেছিলেন।
প্রসঙ্গত গত ৩১ ডিসেম্বর কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার প্রথম নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করায়। তবে কেন্দ্রের তরফে দাবি, নাগরিকত্বের বিষয়ে রাজ্যগুলির এই প্রস্তাব পাশ অনৈতিক। নাগরিকত্বের বিষয়টি একান্তই কেন্দ্রের বিষয়।
Comments are closed.