জিতেন্দ্র তিওয়ারি কাণ্ডে হাত পুড়েছে বঙ্গ বিজেপির। বাবুল সুপ্রিয় থেকে সায়ন্তন বসু, একযোগে জিতেন্দ্র বিরোধিতা প্রাথমিকভাবে তাঁর বিজেপিতে অন্তর্ভুক্তি আটকে দিলেও পরবর্তীতে কী হবে বলা মুশকিল। দল বিরোধী কাজ ও মর্যাদাহানিকর মন্তব্য করার কারণে সায়ন্তন বসু ও অগ্নিমিত্রা পালকে সরাসরি কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব, হাতে ৭ দিন সময়।
এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, সায়ন্তনদের শো কজ করে আসলে কাকে বার্তা দিল দিল্লির নেতৃত্ব? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দিল্লির বার্তা আসলে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। ঘুরিয়ে তাঁকেই হলুদ কার্ড দেখালেন দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের নেতারা। প্রথমে রাজ্যের সংগঠন সম্পাদকের পদ থেকে দিলীপ ঘনিষ্ঠকে সরিয়ে বার্তা দিয়েছিলো দিল্লি। এবার দিলীপ ঘনিষ্ঠ নেতাকে সরাসরি শো কজ, সেই ধারণাকে পোক্ত করেছে।
এমন মনে হওয়ার পিছনে কতগুলো কারণ দেখছেন তাঁরা।
বাংলায় ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিয়মিত ঘুরছেন গ্রাম বাংলায়। প্রতিমাসে নাড্ডা এবং অমিত শাহ আসছেন। শোনা যাচ্ছে মোদীও আসবেন নিয়মিত। এই অবস্থায় বাংলার নেতারা আলটপকা মন্তব্য করে দলকে বিপদে ফেলছেন বলে মনে করছে দিল্লি। সেক্ষেত্রে রাজ্য সভাপতিও দায় এড়াতে পারেন না।
বিজেপি সূত্রে খবর, জিতেন্দ্র তিওয়ারি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসবেন কিনা তা নিয়ে কোনও প্রকাশ্য ঘোষণা দল করেনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদেরও দিল্লি থেকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তাহলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্য বিবৃতি দিলেন কীভাবে দিলেন সায়ন্তন-অগ্নিমিত্রারা? কোন সূত্রে বাংলার নেতারা অনুমান করে নিলেন দিল্লির নেতৃত্বের সঙ্গে জিতেন্দ্রর কথা হয়ে গেছে?
সূত্রের খবর, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির সদর দফতর গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য নেতাদের উপর বিরক্ত। বিজেপির মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ দলে নেতাদের এমন আলটপকা মন্তব্য দিনের শেষে দলের ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। তাই সায়ন্তন বসু বা অগ্নিমিত্রা পালকে শো কজের চিঠি ধরিয়ে বাকি দলকেও বার্তা দেওয়া হল। তা করতে গিয়ে ঘুরিয়ে নিশানায় চলে এলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দলে কাকে কখন নেওয়া হবে সেই সিদ্ধান্তের ভার পুরোটাই দিল্লির নেতৃত্ব নিজের হাতে রেখেছে। ফলে তা নিয়ে রাজ্য নেতারা নিজের মতো বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে সমস্যা হতে পারে। তাই দিলীপ ঘনিষ্ঠ সায়ন্তনের শো কজ নোটিসে দিলীপ ঘোষের বকলমেই কারণ দর্শানোর নির্দেশ গিয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে এটা হল প্রথম রাত্রেই বিড়াল মেরে দেওয়া। যাতে ভবিষ্যতে এমন বিড়ম্বনায় না পড়তে হয় বিজেপিকে।
Comments are closed.