গুজরাত উপ-নির্বাচনে ৩ টি আসনে হারের কারণ দলের অন্তর্কলহ? বিজয় রুপানিকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর জল্পনা, প্রতিবেদন আহমেদাবাদ মিরর-এর
মহারাষ্ট্র-হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট এবং গোটা দেশের সঙ্গে গুজরাতে ৬ টি আসনে উপ-নির্বাচন হয়েছিল। যেখানে ৩ টি করে আসন জিতেছে বিজেপি ও কংগ্রেস। অর্ধেক আসন জিতলেও, এই ফল গভীর চিন্তায় ফেলেছে বিজেপি নেতৃত্বকে। আহমেদাবাদ মিরর সংবাদপত্রে গুজরাত উপ-নির্বাচনের ফলের বিশ্লেষণ করে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ৩ টি আসন হারার পিছনে রয়েছে দলের একাংশের অন্তর্ঘাত। এবং এই অন্তর্ঘাত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বিজেপির দিল্লির নেতৃত্বও। তাঁরা বলছেন, ৩ টি আসন জয়ের পিছনে যত না কংগ্রেসের কৃতিত্ব, তার চেয়ে বেশি হাতযশ বিজেপির।
আহমেদাবাদ মিরর-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাধানপুর, বায়াড এবং থারাড কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীদের হারের নেপথ্যে দলেরই একাংশের হাত রয়েছে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত মোদী-অমিত শাহ। শুধু তাই নয়, একমাত্র শহুরে আসন আহমেদাবাদের আমরাইওয়াডি কেন্দ্রেও যেভাবে সামান্য ভোটে বিজেপি জিতেছে, তাও বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না শীর্ষ নেতৃত্বের।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই গুজরাত বিজেপিতে টালমাটাল পরিস্থিতি। প্রথমে আনন্দীবেন প্যাটেল মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন। তারপর তাঁকে সরিয়ে আনা হয় বিজয় রুপানিকে। সদ্য সমাপ্ত উপ-নির্বাচনে অন্তর্ঘাতের নেপথ্যেও রুপানিরই হাত থাকতে পারে বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ। এই প্রেক্ষিতেই সামনে আসছে আরও একটি তথ্য। তা হল, গুজরাতের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেলকে উপ-নির্বাচনে একটি বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দলের পর্যবেক্ষণ, একমাত্র সেই খেরালু কেন্দ্রেই সহজে জয় পেয়েছে বিজেপি। বাকি আসনগুলোতে সামগ্রিকভাবে দুরন্ত ফলাফল করেছে কংগ্রেস। গুজরাত বিজেপির একাংশের বক্তব্য, এমনটা হওয়ার কথা নয়। আবার অন্য একটি অংশের দাবি, রুপানি বিরোধীদের হাতযশেই ৩ টি আসন হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। যাতে রুপানিকে চাপে রাখা যায়।
এই প্রেক্ষিতেই হাওয়ায় ভাসছে ৩ টি জল্পনার কথা, যে প্রকাশিত হয়েছে আহমেদাবাদ মিরর-এর প্রতিবেদনে। প্রথমত, বিজয় রুপানিকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ থেকে সরিয়ে রাজ্যসভার টিকিট দিয়ে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যকে মুখ্যমন্ত্রী পদে এনে এখন থেকেই ২০২২ সালের প্রস্তুতিতে জোরকদমে লেগে পড়া এবং তৃতীয় তথা সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, অমিত শাহকে গুজরাত ফিরিয়ে এনে মুখ্যমন্ত্রী করা। সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদী নিজে বিশ্বাস করেন, অমিত শাহ দায়িত্ব নিলে ২০২২ সালে বিপুলভাবে জিতে বিজেপির ক্ষমতায় ফিরতে সমস্যা হবে না।
মোদী-অমিত শাহের অনুপস্থিতিতে গুজরাতে বিজেপি যেভাবে চলেছে তাতে খুশি নন দলেরই একাংশ। তাঁরা চাইছেন, অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও, অমিত শাহ লাগাম ধরুন। তাতে অন্তর্দ্বন্দ্বের আশঙ্কায় যেমন জল ঢালা যাবে, তেমনই গুজরাত বিজেপিকে দিশা দেখানোর কাজও করতে পারবেন বর্তমানে কেন্দ্রের দু’নম্বর অমিত শাহ। কিন্তু কেন্দ্রের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী অমিত শাহকে কি শেষ পর্যন্ত গুজরাত জয়ের লড়াইয়ে শামিল করবেন নরেন্দ্র মোদী? কারণ, ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি থেকে শুরু করে এনআরসি, বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই দিল্লিতে প্রধান চালিকা শক্তি হয়ে উঠছেন অমিত শাহ।
Comments are closed.